সম্প্রতি গত কয়েকদিন আগেই ক্যাম্পাসের মধ্যেই ছাত্রলীগের আলোচিত এক নেত্রীর দ্বারা অমানবিক নি’র্যা’ত’নে’র ‘শি’কা’র হন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। তবে পরবর্তীতে এমন অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ। এদিকে ক্যাম্পাসে ফিরে ভয়াবহ সেই রাতের ঘটনার বর্ণনা দিলেন ভুক্তভোগী সেই ছাত্রী নিজেই।
প্রশাসন ও হল কর্তৃপক্ষ থেকে করা তদন্ত কমিটির কাছে এই বর্ণনা দেন ভুক্তভোগী। এ সময় তাকে সঙ্গে নিয়ে নির্যাতনের স্পটগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
শনিবার দুপুর ১২টায় ছাত্রী তার বাবা ও চাচার সঙ্গে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। পরে দুপুর সাড়ে ১২টায় হলের প্রভোস্টের কক্ষে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়। পাঁচ ঘণ্টা হলের মধ্যে অবস্থান করে দুই তদন্ত কমিটির সামনে বক্তব্য দেওয়ার পর বিকেল সাড়ে ৫টায় ভুক্তভোগী ও পরিবারের সদস্যরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। এর আগে নিরাপত্তার আশঙ্কায় ১৩ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন ওই ছাত্রী।
তদন্ত কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি এখন নিরাপদে আছি। তদন্ত কমিটি সেদিনের ঘটনার বিবরণ শুনে আমার স্বাক্ষরিত চার-পাঁচ পৃষ্ঠার লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করে। আমি আজ বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। পরে তদন্তের স্বার্থে আবার ফোন করব। দোষীদের সর্বোচ্চ বিচার চাই।
নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা আতাউর রহমান বলেন, আজ তদন্ত কমিটির কাজে আমি অবশ্যই সন্তুষ্ট। আশা করি তারা সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করবেন। আমি চাই এর একটি সুষ্ঠু আইনি বিচার হোক, সবচেয়ে কঠিন বিচার হোক। যাতে এ ধরনের কাজ আর না হয়। যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এর শিকার না হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল বলেন, “আমরা তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি। তার মুখ থেকে নি’র্যা’ত’নে’র ব’র্ণনা শুনেছি। আমি নিজে গিয়ে নির্যাতনের স্থানগুলো দেখতে গিয়েছিলাম। প্রাথমিকভাবে এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের সন্ধান পাওয়া গেছে।তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই বলা যাচ্ছে না।আর আগামী ২০ তারিখ আসামিদের বক্তব্য শোনার জন্য ডাকা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদাত হোসেন আজাদ বলেন, “আমরা দিনভর ভি’ক’টি’মকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। দুপুরে মেয়েটি তার পরিবার নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। এর আগে বক্তৃতা শেষে সে ও তার পরিবার নিরাপদে বাড়ি ফিরে আসে। সন্ধ্যায়
এদিকে নবীন শিক্ষার্থীর ওপর ‘নি’র্যা’ত’নে”র ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তথ্য-প্রমাণ তলব করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য, প্রকাশনা ও জনসংযোগ দফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, উল্লিখিত বিষয়ে কারো কাছে কোনো তথ্য-প্রমাণ থাকলে তা লিখিত আকারে/ব্যক্তিগতভাবে, প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডল এবং সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির অফিসে ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টার মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রাখা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের ওই শিক্ষার্থীকে গণরুমে ডেকে নিয়ে গত রবিবার রাত ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ওই ছাত্রীকে নি’র্যা’ত’ন’ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ সময় তাকে ‘বি’ব’স্ত্র’ করে ভিডিও ধা’র’ণের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় মঙ্গলবার প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে রিট হলে তদন্ত কমিটির গঠন এবং তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্ত দুই ছাত্রীকে হলের বাইরে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস ছেড়েছেন অভিযুক্তরা।
এদিকে জানা গেছে, এ ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে একজন ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি পদে রয়েছেন। এ অভিযোগ উঠায় তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।