উঠতি বয়সী ছেলে মেয়েদের গোপন সমস্যা সমাধান ও অভিভাবকের পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সর্বনাশ করে পালাতো ওয়াস কুরুনী (২৪) নামে এক যুবক। সম্প্রতি এক নারীর করা অভিযোগের আলোকে অভিযান ওই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার বিরুদ্ধে তদন্তের কাজ চলমান রয়েছে।
জানা যায়, ভুয়া কবিরাজ ওয়াস কুরুনির নিয়োগকৃত মহিলা এজেন্টরা স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় বাড়ন্ত বয়সী শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে কাজ করত। তারা রাজধানী ও আশপাশের বিভিন্ন বালিকা বিদ্যালয় ও মহিলা মাদ্রাসায় গিয়ে অপেক্ষমাণ অভিভাবকদের সঙ্গে মিশতো। অভিভাবকদের ছদ্মবেশে স্কুলছাত্রীরা মেয়েদের নানা গোপন সমস্যার কথা বলত। চক্রের মহিলা সদস্যরা কবিরাজি চিকিৎসা ও তাবিজের কথা বলে এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধান পেতে প্রলুব্ধ করতেন।
বুধবার (২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর টিকাটুলী র্যাব-৩ এর সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্যাপ্টেন আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।
বুধবার সকালে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং এলাকা থেকে কুরুনিকে (২৪) আটক করে র্যাব-৩। এ সময় তার কাছ থেকে পাগড়ি, সোনার হার, সোনার চেইন, কানের দুল, মাথার টিকলি, মাথার চুল, ৫টি সাপ, মন্ত্রের কাগজ, তাবিজের খোল, বানাজি কাঠের লাঠি, ২টি হরিণের চামড়া, বিভিন্ন ধরনের বনের গাছসহ বিভিন্ন জিনিস উদ্ধার করা হয়।
ক্যাপ্টেন আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ওই নারী এজেন্ট ছাড়াও আরও ২০ থেকে ২২ জন নির্বাচিত এজেন্ট পাওয়া গেছে। এই এজেন্টদের কাজ হল এই পোস্টগুলি বারবার শেয়ার করার মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া। পরে স্বার্থান্বেষী মহলের প্রতারণা করে তাদের কাছ থেকে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে। কুরুনির বিকাশ নম্বরে টাকা লেনদেন করত চক্রের মূল হোতা। এছাড়া কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার নেওয়া হয়।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক জানান, ভন্ড কবিরাজ ওয়াস কুরুনির তিনটি বেনামী ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এগুলো পরিচালনা করতেন কবিরাজ আলী আশরাফ, তান্ত্রিক কবিরাজ ও হুমায়ূন আহমেদ।
এ সময়ে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে আরো জানান, এই যুবকের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে তাদের অর্থ ও দাবি অলংকার হাতিয়ে নেয়া। আর এ জন্য ভুক্তভুগীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতেন তিনি।