চিত্র জগতের নায়ক নায়িকারা শুধুই যে চিত্র জগতের মধ্যে সীমাবদ্ধ তা নয়। উপার্জন শুরু হওয়ার পর থেকেই দেখা যায় বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্ন পথ থেকে তাদেরকে ইনকাম করতে। অনেকেরই রয়েছে নানান রকম ব্যবসা। বেশিরভাগ অভিনেত্রী অভিনেতা দের দেখা যায় শুধুমাত্র চিত্র জগতের উপর নির্ভর না করে পাশাপাশি কোন একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু রাখার। এসেছে এমনই তথ্য বাংলাদেশের বেশিরভাগ চলচ্চিত্র অভিনেতা অভিনেত্রীদের নামে।
ইমরুল শাহেদ: সম্প্রতি ফেসবুকের একটি স্ট্যাটাসে দেখা যায়, একজন নায়িকার রিক্সার গ্যারেজ আছে। অভিনয়ের পাশাপাশি এটি তিনি দেখাশোনা করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সেই নায়িকা হলেন শখ। এভাবে প্রায় সব তারকারই কোনো না কোনো একটা পার্শ্ব ব্যবসা আছে। শাকিব খান বসুন্ধরা সিটিতে বলতে গেলে প্রায় ঢাকঢোল পিটিয়েই একটি ফার্স্ট ফুডের দোকান খুলেছেন। পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন অন্যদের উপর। নবাগত নায়ক স্বাধীন মগবাজার এলাকায় একটি ভাতের হোটেল দিয়েছেন। নায়িকা পরীমনিরও একটি রেস্তোরাঁ ছিল মগবাজার এলাকায়।
সেটি চালাতো তার সহকারী মেহেদী। পরে এই রেস্তোরাঁটি ছেড়ে দেওয়া হয়। শাবনূর পল্টন এলাকার গাজী ভবনে বেশ কয়েকটি দোকানের পজিশন কিনেছিলেন। কয়েক বছর পর সেগুলো বিক্রি করে দেন। মৌসুমীরও একটা ব্যবসা আছে। ব্যবসাটি বুটিক জাতীয়। মহামারির এ সময়টাতে তিনি বেকার বসে না থেকে সেখানেই কাটিয়েছেন। সম্প্রতি তাকে তার ছেলের ব্যবাসায়িক কোম্পানির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। অভিনেত্রী আলিশা প্রধান একটি অনলাইন টিভি করেছেন। তিনি এখন আর অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত নেই। নায়িকা ইয়ামিন হক ববি ও নায়িকা সঙ্গীতার গুলশানে রেস্তোরাঁ আছে। তারা মাঝে মধ্যেই তাদের নিজ নিজ রেস্তোরাঁয় সময় দেন। নায়িকা মিষ্টি জান্নাতের একটি ফ্যাশন হাউজ আছে গুলশানের পুলিশ প্লাজায়। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একজন ডাক্তার। নায়িকা রেসি, নিপুণ, নিঝুম রুবিনা ও অহনার বিউটি পার্লার রয়েছে।
তারা নিজেরাই স্ব স্ব ব্যবসা দেখাশোনা করেন। এসব পার্লাগুলো রয়েছে বনশ্রী, উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে। অহনা এবং দু’একজন মিলে তাদের বিউটি পার্লারটি করেছেন। সেটি উত্তরায় সীমাবদ্ধ না রেখে শহরের স্থানে করার চেষ্টা করছেন এখন। এক সময়ের খ্যাতিমান নায়িকা রাণী এখন শিক্ষকতা করেন। তিনি কারো সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না। চিত্রাঙ্গনের কাউকে পেলেও এড়িয়ে যান। নায়ক জয়, তার স্ত্রী নীল এবং নায়িকা আঁচল মাঝেমধ্যেই মেলা করে জিনিসপত্র বিক্রি করেন। সেখান থেকে তাদের ভালো একটা আয় আসে বলে তাদেরই একজন জানিয়েছেন। নায়করাজ হিসেবে পরিচিত রাজ্জাকের ছিল উত্তরার রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্স। সেখানে একটি মিষ্টির দোকানও ছিল। রাজ্জাক প্রয়াত হওয়ার পর তার ছেলেরাই সেগুলো এখন দেখা দেশাশোনা করছেন। বাপ্পারাজ ও সম্রাট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আলমগীরের গার্মেন্টস ও আবাসন ব্যবসা আছে। নায়ক অনন্ত জলিলেরও রয়েছে গার্মেন্টস ব্যবসা। ফারুক একটি সুয়েটার ফ্যাক্টরী করেছিলেন। কিন্তু সেটা তিনি শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেননি। নায়ক শাহীন আলমের গাউসিয়া মার্কেটে ছিল বড় ধরনের একটি কাপড়ের দোকান। এই ব্যবসাতে থেকেই তিনি সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন।
এমন উদ্যোগ এক হিসাবে ভালো খবর বটে। কারণ শুধু চিত্র জগতের উপর নির্ভর করেই জীবন পার করে দেওয়া অনেকের পক্ষেই একসময় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু পাশাপাশি যদি কোন একটা ব্যবসা থাকে তাহলে চিত্রজগতে নিজের আধিপত্য হারালেও সেখান থেকে উঠে আসে একটা ইনকাম সোর্স। তবে এখানে বিষয়টা একটু ব্যতিক্রমী হতে পারে, হয়তো টাকা ইনকামের নেশায় এমন উদ্যোগ বেশিরভাগ অভিনেতা-অভিনেত্রীদের।