২০১৫ সালের দিকের কথা, ঐন্দ্রিলা শর্মা সেই সময় পড়াশুনা করেন স্কুলে। তার জন্মদিন যে দিন পালন করা হবে সেই দিনে তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, তার ক্যা”ন্সার হয়েছে। তিনি তার মায়ের কাছ থেকে অনেক সাহস পেয়েছিলেন। কারণ তার মা তাকে জানিয়েছিলেন, ‘ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়া এখন কোনো বিষয় নয়। বেশিরভাগ মানুষ তো আরোগ্য লাভ করছেন। তোর তো বয়স কম। তুই তো অবশ্যই এই রোগকে হারাতে পারবি।’ মন শক্ত করে ফেলেন তিনি। “এই লড়াইটা অবশ্যই জিততে হবে…”, তিনি জিতছিলেন ও। এটাই শুরু।
তারপর থেকে জীবন তাকে একের পর এক পরীক্ষা করিয়ে নিয়েছে। কিন্তু, তিনি কখনো হাল ছাড়েননি। লড়াই করেছেন। শনিবার রাতে তার দশটি কার্ডিয়াক অ্যা”রেস্ট হয়। ভেন্টিলেশনে থাকা ঐন্দ্রিলা সেই ধাক্কাও সামলে নিয়েছিলেন। সকাল থেকেই তার সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসকরা। ২৪ বছর বয়সী তরুণীর লড়াইয়ের ক্ষমতা দেখে তারাও বিস্মিত। কিন্তু, রবিবার ফের হার্ট অ্যাটাক। চিকিত্সকরা সিপিআর দিয়ে তাকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চালিয়ে যান। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের জানানো হয় চর’ম দুঃসংবাদ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কয়েক সেকেন্ডের জন্য তার হৃদস্পন্দন পাওয়া যায়। ফিরিয়ে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা! একটি সাক্ষাত্কারে, ঐন্দ্রিলা বলেছিলেন, “২০২১ সালে যখন আমার ফুসফুসে টিউমার ধরা পড়ে, তখন ডাক্তাররা আমাকে অ”স্ত্রোপচার করতে বলেছিলেন। আমার বাঁচার এতটাই ইচ্ছে ছিল যে আমি এক মিনিটে হ্যাঁ বলে দিই।” ১৯ দিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাওয়া মেয়েটি শেষ মুহূর্তেও লড়াই করেছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, “সম্ভবত সিপিআরে কিছুক্ষণের জন্য নাড়ি ফিরে আসে। আমরা মূলত সিপিআর দিয়ে হার্টকে ম্যাসাজ করি। হৃৎপিণ্ডের ‘সাড়া’ দেওয়ার পরেই হয়তো স্পন্দন এসেছিল। কিন্তু, এই ক্ষেত্রে, CPR বন্ধ করলে আবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে। এভাবেই এক সময় হার্ট কাজ করা বন্ধ করে দেয়।”
উল্লেখ্য, রবিবার হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অভিনেত্রী। তার প্রয়ানে ভক্তরা শোকাহত। শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। অভিনেত্রীর পরিবারের সদস্যরা তাকে হারিয়ে অনেকটা বাকহীন। উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর তিনি ব্রেন স্ট্রোকে আ”ক্রান্ত হন।
এর পরের চিকিৎসার জন্য তাকে নেওয়া হয় হাওড়ায়। সেখানে একটি নামকরা বেসরকারি হাসপাতালে বিশেষ বিভাগে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে ডাক্তাররা যথা সম্ভব উন্নত চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেখানে ঐন্দ্রিলাটানা ১৯ দিন যমদূতের সাথে ল”ড়াই করেছিলেন। কিন্তু, আজ রবিবার অর্থাৎ ২০ নভেম্ভর সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন এই অভিনেত্রী।