Friday , December 27 2024
Breaking News
Home / Countrywide / অভিনব কায়দায় ফেষ্টুন টাঙিয়ে দোয়া চাইলেন পাবনার ৫ পরীক্ষার্থী

অভিনব কায়দায় ফেষ্টুন টাঙিয়ে দোয়া চাইলেন পাবনার ৫ পরীক্ষার্থী

এসএসসি পরীক্ষার বিলবোর্ড টাঙিয়ে দোয়া চেয়েছেন পাবনা বেড়ার পাঁচ শিক্ষার্থী। আলোচিত ওই পাঁচ শিক্ষার্থীদের বিলবোর্ডের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। উল্লেখিত ছা্ত্রদের দাবি, ভাইরাল হওয়ায় তারা এটা করেননি। পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ভাগ্যের কথা ভেবে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তারা। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালকরা বিষয়টিকে ইতিবাচকতা ও সৃজনশীলতার উদাহরণ হিসেবে দেখছেন।

পাবনার পাঁচ শিক্ষার্থীর পরীক্ষার জন্য দোয়া চেয়ে বিলবোর্ড টাঙিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। কেউ কেউ তাদের কাজকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন, অনেকে এটিকে সৃজনশীলতার প্রকাশ হিসেবে দেখেন। ওই পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন- পাবনার বেড়া উপজেলার জাটসাকিনি ইউনিয়নের কাবাসকান্দা গ্রামের ইফতেখার উদ্দিন আহমেদের ছেলে সুহাইব আহমেদ শাহেদ, একই গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে অমিত হাসান রাফিদ, নয়াবাড়ি গ্রামের মোহন মোল্লার ছেলে নাহিদ হাসান। একই ইউনিয়নের দ্বারিয়াপুর গ্রামের খন্দকার শহীদ খন্দকার মাশরাফি ওই গ্রামের খন্দকার আবদুল্লাহ আল মামুনের ছেলে। তারা বেড়ার কাশিনাথপুর কর্নারে অবস্থিত কাশিনাথপুর বিজ্ঞান বিদ্যালয়ের ছাত্র। সবাই স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তারা সপ্তম শ্রেণি থেকে এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে। তাদের এসএসসি পরীক্ষা ১৯ জুন থেকে শুরু হবে। পাঁচজন শিক্ষার্থী নিজেদের আলাদা করতে এসএসসি পরীক্ষার জন্য দোয়া চেয়ে তাদের নামের বিলবোর্ড ঝুলিয়েছে। তারপর তা ভাইরাল হয়ে যায়।

শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান বলেন, এমন কিছু করার পরিকল্পনা ছিল না। আমরা ৪ জুন একটি প্রেসের সামনে দাঁড়িয়ে পাঁচ বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলাম। সেখানে একটি ডিজিটাল বিলবোর্ড দেখে কেউ অবাক হয় যে আমরা এমন একটি বিলবোর্ড তৈরি করতে পারি কিনা। তারপর আমরা আলোচনা করে একটি বিলবোর্ড তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ছাত্র অমিত হাসান রাফিদ বলেন, আমরা যেহেতু রাজনীতি করি না তাই বিলবোর্ড করার উদ্দেশ্য নিয়েই চিন্তা করি। তখন আমাদের মনে হলো, এবার আমরা এসএসসি পরীক্ষার্থী। আমরা সবার কাছ থেকে দোয়া চেয়ে একটি বিলবোর্ড তৈরি করতে পারি। সেই চিন্তা থেকেই আমরা মূলত ডিজিটাল বিলবোর্ড বানাই। সুহাইব আহমেদ শাহেদ বলেন, গত ৪ জুন আলোচনার পর আমরা স্থানীয় সবুজ ডিজিটাল প্রেসে তিনটি বিলবোর্ড করার অনুমতি দিয়েছিলাম। খরচ এক হাজার টাকা। পরের দিন আমরা কাশিনাথপুর মোড়ে, পুলিশ বক্সের পাশে, ফুলবাগান চত্বরে এবং বিজ্ঞান বিদ্যালয়ের সামনে তিনটি বিলবোর্ড টাঙাই। আমরা কেউই ফেস// বুকে বিলবোর্ডের কোনো ছবি পোস্ট করিনি। কাশিনাথপুর মোড়ে পুলিশ বক্সের পাশে ঝোলানো বিলবোর্ডের ছবি ভাইরাল হওয়ার পর আমাদের নজরে আসে।

খন্দকার মাশরাফি বলেন, ভাইরাল হওয়ার জন্য আমরা এটা করিনি। এমন ভাইরাল হবে ভাবিনি। আমরা শুধু আমাদের এসএসসি পরীক্ষার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছি। বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় অনেকের নেতিবাচক মন্তব্য দেখে গত ৮ জুন বিলবোর্ড নামিয়ে ফেলি। আমদের কেউই এই কাজে নিষেধ করেনি। আমাদের বিলবোর্ড সম্পর্কে পরিবার বা শিক্ষক কেউই জানত না। সামি খন্দকার বলেন, দীর্ঘদিনের করোনার কারণে আগের ব্যাচের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় আমরা পরীক্ষা দিতে পারছি। এ নিয়ে আমরা খুশি। আমাদের প্রস্তুতিও ভালো। তবে ফলাফল ভাগ্যের উপর অনেকটাই নির্ভর করে। তাই পরিবার-স্বজনদের পাশাপাশি স্থানীয়দের দোয়ার জন্য এই বিলবোর্ডটি তৈরি করেছি। ভাইরাল হবে ভাবিনি। তবে অনেক ইতিবাচক মন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে আমরা কোনো ভুল করিনি। আমরা খারাপ কিছু করিনি।

কাশিনাথপুর বিজ্ঞান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের পাঁচজন শিক্ষার্থী অভিনবভাবে দোয়া চেয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা আমাদের নজরে আসে। তারা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তবুও আমরা এটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখি। কারণ তারা কোনো অপরাধ করেনি। তারা শুধু দোয়া চেয়েছে। তারা বিভিন্ন উপায়ে দোয়া চাইতে পারেন। বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আমিরুল ইসলাম সানু জানান, বিষয়টি তারা বুঝতে পারেননি। ফেসবুকে অনেকেই বিরূপ মন্তব্য করেছেন। আবার অনেকে এটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। স্কুল কর্তৃপক্ষের অনভিজ্ঞতায় আমরাও কিছুটা বিব্রত ছিলাম। তবে আমি মনে করি না তারা কোনো ভুল করেছে। আমরা এটাকে সৃজনশীলতার উদাহরণ হিসেবে দেখতে চাই।

উল্লেখ্য, পাবনার বেড়া উপজেলার ব্যস্ততম কাশিনাথপুর মোড়ে ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের পাশে কাশিনাথপুর বিজ্ঞান বিদ্যালয় নামে বিদ্যালয়টি অবস্থিত। ওই বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থীর সবারই বয়স ১৬-১৮ বছর। তারা খুব ভালো বন্ধুর পাশাপাশি সহপাঠী হিসেবে পরিচিত। তারা ওই স্কুলে সপ্তম শ্রেণি থেকে একসাথে পড়াশোনা করে আসছে বলে স্থানীয় সুত্রে জানা যায়। তারা ১৯ জুন থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার জন্য দোয়া চেয়ে তাদের নামের বিলবোর্ড টাঙিয়েছেন পাঁচজন শিক্ষার্থী সামাজি

About Syful Islam

Check Also

খেজুরের রস পান করতে এসে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, গ্রেফতার ১৫

নেত্রকোনা থেকে খেজুরের রস খেতে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া আসা ১৫ যুবক ‘জয় বাংলা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়ায় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *