ছাত্রলীগের দুই নেতাকে থানায় নিয়ে বেদম প্রহারের ঘটনায় এখন টক অব দ্য টাউন পুলিশের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এডিসি হারুন অর রশিদ। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এডিসি হারুন প্রসঙ্গ উঠে এলা জাতীয় সংসদের আলোচনাতেও।
জাতীয় পার্টির (জাপা) সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক চুন্নু থানায় ছাত্রলীগ নেতাদের নির্যাতনের ঘটনার সমালোচনা করে বলেন, এই ঘটনা হিন্দি সিনেমাকেও হার মানিয়েছে।
একটি বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে মুজিবুল হক বলেন, হিন্দি সিনেমার মতো একজন কর্মকর্তা তার অবৈধ প্রেমের কারণে ছাত্রলীগের সাত-আটজন নেতাকে থানায় নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করেন। সিনেমাকে হার মানিয়েছে। এটা খুবই জঘন্য ঘটনা। পুলিশের হেফাজতে নিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের নির্যাতন করে, সরকারি দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাদের ওপর নির্যাতন করে, তাহলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কী অবস্থা?
এ ধরনের ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিলে বিচার হবে না। সুবিচার হবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা মামলা করে ফৌজদারি আইনের আওতায় এনে বিচার করে সাজার ব্যবস্থা করা হলে।
মুজিবুল হক বলেন, ঢাকায় পদায়ন হওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নেওয়া হয়েছে। যারা অনুগত ছিল, অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছিল, তাদের ঢাকায় পোস্ট করা হয়েছিল। তার পরও এমন কর্মকর্তা ঢাকায় এলেন কী করে?
উল্লেখ্য, গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে এডিসি আফরিনের স্বামী আজিজুল হক মামুনের সঙ্গে এডিসি হারুনের কথা কাটাকাটি ও মারামারি হয়। মামুনের সঙ্গে ছিলেন ছাত্রলীগের দুই নেতা। পরে এডিসি হারুন অর রশিদ ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে গিয়ে বেদম মারধর করেন। দুই ছাত্রলীগ নেতা হলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম, বৈজ্ঞানিক বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ।
পরদিন ১০ সেপ্টেম্বর এডিসি হারুনকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা হয়। পরে তাকে ডিএমপি থেকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) বদলি করা হয়। গত ১১ সেপ্টেম্বর এই বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এদিন শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম মোস্তফাকেও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ অফিসে বদলি করা হয়।
সর্বশেষ গত ১২ সেপ্টেম্বর হারুনকে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সরিয়ে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। এদিন হারুন মামলায় প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের কাছে মুখ খুললেন এডিসি সানজিদা আফরিন। সেখানে স্বামীর পক্ষে অবস্থান না নিয়ে চাকরিচ্যুত এডিসি হারুনের পক্ষে অবস্থান নিতে দেখা যায়। ডিএমপি সূত্র জানায়, সানজিদাকে ডিএমপি থেকে সরিয়ে ঢাকার বাইরে কোথাও বদলির সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে আদেশ জারি করবে পুলিশ সদর দপ্তর।