বাংলাদেশ এখন ভুগছে ভয়ানক রিজার্ভ সংকটে। আর এই কারনে দেশের অর্থনীতির পরিস্থিতি দিন দিন চলে যাচ্ছে বেশ খারাপের দিকে। এবার আরো ভয়ের খবর দিলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মানদণ্ড অনুযায়ী রিজার্ভ গণনা করতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর হওয়ায় আইএমএফ ব্যবস্থায় রিজার্ভের হিসাব শুরু হতে কিছুটা সময় লাগবে। রোববার (৩০ অক্টোবর) এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “আইএমএফের মান অনুযায়ী, প্রকৃত রিজার্ভ হবে ২,৭৮০ মিলিয়ন ডলার।”
আইএমএফ-এর মানদণ্ড অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অবশ্যই রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে শ্রীলঙ্কার ঋণ এবং রিজার্ভ থেকে দেশীয় প্রকল্পের অর্থায়নের খরচ কাটতে হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন নির্বাহী পরিচালক রোববার বলেন, “নীতিগতভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক রিজার্ভের পরিমাণ হিসাব করতে বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হলে, রিজার্ভ $ ৩,৫৮০ কোটি থেকে $ ২,৭৮০ কোটিতে নেমে আসবে।”
তিনি বলেন, “আইএমএফ প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়েছে যে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী রিজার্ভ অ্যাকাউন্টের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
তবে বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় কবে থেকে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে সে বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের অনুমোদন প্রয়োজন বলে জানান এ কর্মকর্তা। তিনি আরও জানান, আইএমএফের মানদণ্ড অনুসরণের পাশাপাশি দেশের বিদ্যমান মানদণ্ডের ভিত্তিতে হিসাবও প্রকাশ করা হবে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিশ্বের বেশিরভাগ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আইএমএফের ব্যালেন্স অফ পেমেন্টস এবং ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল অনুযায়ী গণনা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ নেট রিজার্ভ এবং মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হিসাব করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ হিসাব করে।
বাংলাদেশ দুইভাবে রিজার্ভ হিসাব করছে। প্রথমত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন সমস্ত বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভে দেখানো হয়। অন্যভাবে ইডিএফসহ বিভিন্ন তহবিলের টাকা বাদ দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আবুল কালাম আজাদ বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভসহ বিভিন্ন বিষয়ে আইএমএফের নিয়ম মেনে চলতে সম্মত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গোড়ার দিক থেকে বাংলাদেশে রিজার্ভের টান পড়তে শুরু হয়। এ চড়াও প্রবাসীদের টাকা পাঠানোর হার কমে যাওয়ার কারনে এই টান এখন হয়ে দাঁড়িয়েছে বড় একটি বিপদের সংকেত। এখান থেকে সরকার উত্তরণের নানা ধরনের চেষ্টা চালালেও এখনো আসেনি তেমন কোনো সাফল্য।