Thursday , September 19 2024
Breaking News
Home / economy / অবস্থার চরম অবনতি, দেশের ৮ ব্যাংকে আসেনি এক টাকাও, সামনে আসছে আরো বড় ধাক্কা

অবস্থার চরম অবনতি, দেশের ৮ ব্যাংকে আসেনি এক টাকাও, সামনে আসছে আরো বড় ধাক্কা

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন পৌঁছে যাচ্ছে খারাপের দিকে। দেশের সব থেকে বড় আয় হয় প্রবাসীদের রেমিটেন্স দ্বারা। আর সেই রেমিটেন্সও কমে যাচ্ছে ভয়ংকর হারে।একের পর এক সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পরও থামানো যাচ্ছে না রেমিট্যান্সের পতন (প্রবাসী আয়)।ধারাবাহিকভাবে কমে যাচ্ছে রেমিট্যান্স। গত অক্টোবরে প্রবাসীরা ১৫২ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন।

এই সংখ্যা গত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এছাড়া অক্টোবরে আটটি দেশি-বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এক টাকাও রেমিট্যান্স আসেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি শেষ হওয়া অক্টোবরে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ (প্রায় ১ দশমিক ৫২ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। প্রবাসী আয়ের এই পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ দশমিক ১৪ মিলিয়ন ডলার বা ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ কম। গত বছরের অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছিল $১৬৪.৬৯ মিলিয়ন। শুধু তাই নয়, অক্টোবরে প্রবাসী আয়ের অঙ্ক গত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশে ১ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। চলতি অর্থবছরের টানা দুই মাসে বৈধ পথে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছে ২০৩ কোটি ৭৮ লাখ (২.০৩ বিলিয়ন) ডলার। আগের মাসে জুলাই মাসে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। জুলাই মাসে পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বিপুল পরিমাণ প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। কিন্তু আগস্টে বড় কোনো উৎসব হয়নি, তারপরও প্রবাসী আয় রয়ে গেছে $২০০ মিলিয়ন।

কিন্তু সেপ্টেম্বর-অক্টোবর এলে এই উল্লম্ফন হোঁচট খেয়েছে। সেপ্টেম্বরে এসেছে ১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। আর সাম্প্রতিক প্রস্থান অক্টোবরে আরও কমে ১৫২ মিলিয়ন ৫৪ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, অক্টোবরে সরকারি পাঁচটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স ৩০৭.২ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১১৮.৬ মিলিয়ন ডলার। ৭.১ মিলিয়ন ডলার এসেছে বিদেশী ব্যাংকের মাধ্যমে এবং ২.৫ মিলিয়ন ডলার এসেছে একটি বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে। বরাবরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে।

অক্টোবরে ব্যাংকটির প্রবাসী আয় ছিল ৩৫৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার। এরপর অগ্রণী ব্যাংকে ১০ কোটি ৬৪ লাখ, সোনালী ব্যাংকে ৮ কোটি ৯৪ লাখ, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে ৮ কোটি ৬৬ লাখ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে ৮ কোটি ৪৮ লাখ ও রূপালী ব্যাংকে ৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা রয়েছে। কিন্তু এ সময়ে আটটি ব্যাংকে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এগুলো হলো বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, ফরেন সেক্টর ব্যাংক আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।

এদিকে রেমিটেন্স বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বৈদেশিক বিনিময় সংস্থার মতো ব্যাংকের মাধ্যমে সরাসরি রেমিট্যান্স পাঠানো হলেও প্রবাসীরা প্রতি ডলার পাবে ১০৭ টাকা, যা আগে ছিল ৯৯ টাকা ৫০ পয়সা। এছাড়া এখন থেকে রেমিটেন্স সংগ্রহের জন্য ব্যাংকগুলো কোনো ফি নেবে না। গত সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি এবং বৈদেশিক মুদ্রার ব্যাংক বাফেডার সমিতির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া বর্তমানে বিদেশ থেকে কোনো পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠাতে কোনো নথির প্রয়োজন নেই। আবার প্রবাসী আয়ে আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। প্রণোদনা বাড়লেও গত অর্থবছরে প্রবাসী আয় দ্রুত কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম।

প্রসঙ্গত, লাখ প্রবাসী প্রতি মাসে হাজার কোটি টাকা রেমিটেন্স দিয়ে থাকে বাংলাদেশে। আর সেই রেমিটেন্সের টাকা দিয়েই সচল থাকে দেশের অর্থনীতি। তবে এ মাসে সেই রেমিটেন্স পাঠানোর হার আরো কমে যাওয়ার কারনে এখন বেশ চাপে রয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এ ছাড়াও আগামী ২০২৩ সারা বিশ্বে আসছে আরো বড় ধাক্কা। আর এই ধাক্কার কবলে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশও। তাই রেমিটেন্স কমে যাওয়া একটি বড় ধরনের অশনি সংকেত হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের জন্য।

About Rasel Khalifa

Check Also

রিজার্ভ নিয়ে বিশাল বড় সুসংবাদ দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রবাসী আয় বৃদ্ধি এবং রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *