সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনকে রাজস্ব বোর্ডের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। গত মঙ্গলবার (২১ জুন) আদালতে ড. কামালের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও ব্যারিস্টার রমজান আলী সিকদার। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
গণফোরামের সভাপতি ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনের ল হাউস কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ৬,৯৬৫,৩১৫ টাকা দাবি করে ১০ শতাংশ করে দিয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস এক কোটি চার লাখ তিন হাজার ৪৯৫ টাকা আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছে। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আয়কর দাবি করেছে ৬,৯৬৫,৩১৫ টাকা এবং সুদ ৮৭,৩৫,৬৩৪ টাকা। বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। কামালের ল হাউস। নিয়ম অনুযায়ী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে ১০ শতাংশ করের দাবি করা হয়েছে ৬ কোটি ৯ লাখ ৬৫ হাজার ৩১৫ টাকা। তার নির্দেশে তারা টাকা জমা দেন। মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কামালের আইনজীবী ব্যারিস্টার রমজান আলী সিকদার বলেন, আমাদের রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট স্থিতাবস্থা জারি করেছে। পাশাপাশি রুল জারি করেন। ইতিমধ্যেই আমরা ৮৩ লাখ টাকা জমা দিয়েছি। গতকাল আরও ৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা জমা দিয়েছি। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী আমরা আপিলের পুরো টাকা পরিশোধ করেছি, আমরা পুরো টাকা পরিশোধ করেছি। কর ফাঁকি সংক্রান্ত আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে গত ১৪ জুন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রিট আবেদনটি অপসারণ করে। পরে তারা বিষয়টি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে যান। এর আগে, ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাজস্ব বোর্ডের একজন জেলা প্রশাসকের আদেশের বিরুদ্ধে তিনি সংশ্লিষ্ট যুগ্ম কমিশনারের কাছে আপিল করেন। আপিল শুনানির পর, এটি ২৫ জুন, ২০২০ তারিখে খারিজ হয়ে যায়। আগের আদেশ বলবৎ থাকে।
উল্লেখ্য, ড. কামালের বিরুদ্ধে আনিত মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ড. কামাল রিটার্ন দাখিল করে আয় দেখিয়েছেন এক কোটি চার লাখ তিন হাজার ৪৯৫ টাকা। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০ কোটি ১১ লাখ চার হাজার ২১৯ টাকার সম্পদ দেখিয়ে ৬ কোটি নয় লাখ ৮৫ হাজার ৩১৫ টাকা এবং সুদ ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার ৬৩৪ টাকা দাবি করে। রাজস্ব বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন ড. কামাল হোসেন। পরে আদালত আবেদনটি খারিজ করে দেন। এরপর তিনি ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন।