বিয়ের দিনকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই নানা স্বপ্ন বুনে থাকেন অনেকেই। তবে নিয়ম-নীতির কারণে অনেকেই সেই স্বপ্ন পূরণে ব্যর্থ হয়ে থাকেন। কিন্তু এবার যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা যেন জন্ম দিয়েছে নতুন এক আলোচনার। জানা গেছে, নিয়মের ব্যতিক্রম হওয়া সত্ত্বেও এবার কনের ইচ্ছা পূরণ করলেন একদল পুলিশকর্মীরা।
তার বরকে ঘোড়ায় চড়ে বিয়েতে আনা হয়েছিল। কনে এবং তার পরিবারের সদস্যরা চেয়েছিলেন বর ঘোড়ার পিঠে চড়ে বিয়ের জন্য আসুক। সেই ইচ্ছা পূরণ করলেন ৬০ জন পুলিশকর্মী।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের সাম্বল জেলার লোহামাই গ্রামে। গ্রামের দলিত মেয়ে রাবিনার সাথে রাম কিষানের বিয়ে ঠিক হয়। কিন্তু এলাকার তথাকথিত উচ্চবর্ণের লোকেরা দলিতদের ওপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে বলে অভিযোগ। তাই রবিনা-রামের চার হাত বেঁধে দিল পুলিশ। বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বরকে বিয়ের অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হয় ঘোড়ায় বসানো ডিজে গান বাজিয়ে। দলে ৪ পুলিশ কনস্টেবল, ১৪ সাব-ইন্সপেক্টর, ১ ইন্সপেক্টর এবং সাম্বল থানার ১ সার্কেল অফিসার ছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দলিত বিয়ের অনুষ্ঠানে গ্রামের তথাকথিত উচ্চবর্ণের লোকেরা কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। বলা হয়েছিল দলিতদের বিয়ে খুব ধুমধাম করে করা উচিত নয়। ওই গ্রামে বরকে মিছিলে নিয়ে যাওয়াও নিষিদ্ধ ছিল। এ অবস্থায় কনের পরিবার পুলিশের সহায়তা চায়। তাদের অনুরোধে সাম্বল থানার এসপি চক্রেশ মিশ্র শুক্রবার রাতে সংশ্লিষ্ট গ্রামে একটি বড় পুলিশ বাহিনী পাঠান। পুলিশের উপস্থিতিতে বিয়েতে কোনো সমস্যা হয়নি। সম্বল থানার পুলিশ সদস্যরা বর ও কনেকে বিয়ের উপহার হিসেবে ১১ হাজার টাকা দিয়েছেন।
বিয়ের দিন কিছুটা গোলমাল হতে পারে, আন্দাজ করেছিল কনের পরিবার। ৩১শে অক্টোবর, রাবিনার চাচা রাজেন্দ্র বাল্মিকি তাই নিরাপত্তার জন্য সাম্বলের জেলা কালেক্টরকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। তিনি জানান, এই বিয়েতে তারা ছটফট করতে চান। এরপর বিয়ের দিন নিরাপত্তার জন্য থানা থেকে পুলিশ পাঠানো হয়। বিয়ে ঠিকমতো সম্পন্ন হলো।
এ ঘটনায় গোটা এলাকাজুড়ে আনন্দের বন্যা বইতে শুরু হয়েছে। অনেকেই আবার বরকে এক নজর দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন। এ সময়ে সবাইকে বেশ উল্লাস করতে দেখা যায়।