আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম বর্তমান সময়ে বেশ আলোচনায় রয়েছেন। তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করার পর তিনি ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছেন। তাছাড়া এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি তিনি একটি গাড়ির বিষয়েও সংবাদ মাধ্যমগুলোর শিরোনাম হয়েছিলেন। গাড়িটি নিয়ে তিনি বিপাকে পড়লেও কিছুটা হলেও সুসংবাদ পেয়েছেন হিরো আলম। কারণ ফিটনেস বিহীন এই গাড়িটিকে তিনি ফিট হিসেবেই পেতে যাচ্ছেন।
হবিগঞ্জের শিক্ষক মখলেছুর রহমানের দেওয়া মাইক্রোবাসটিকে অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে ব্যবহারের ঘোষণা দেন হিরো আলম। সে উদ্দেশ্যে গাড়িটি বগুড়ার একটি ওয়ার্কশপে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওয়ার্কশপ কর্তৃপক্ষ দেশের একটি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, গাড়িটিকে অ্যাম্বুলেন্সে রূপান্তর করে বিনামূল্যে হিরো আলমকে দেওয়া হবে।
কয়েকদিন আগে হিরো আলমের উপহার দেওয়া গাড়িটি বগুড়া শহরের বকশীবাজার এলাকায় ‘ডিবিআর অটোমোটিভ কমপ্লিট অটো সেন্টার’ নামের ওয়ার্কশপে নিয়ে যাওয়া হয়। ওয়ার্কশপ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাড়িটিকে অ্যাম্বুলেন্সে রূপান্তর করতে প্রায় ২০ দিন সময় লাগবে।
ধারণা করা হয়েছিল যে ১০ বছর আগে ফিটনেসের জন্য অযোগ্য এই গাড়িটি ঠিক করতে হিরো আলমকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হবে। তবে ওয়ার্কশপ কর্তৃপক্ষ যেহেতু বিনামূল্যে গাড়িটিকে অ্যাম্বুলেন্সে রূপান্তর করে হিরো আলমকে দেবে, সেহেতু গাড়িটিকে ব্যবহার উপযোগী করতে কী পরিমাণ অর্থ লাগবে তা জানা যায়নি।
সোমবার ডিবিআর অটোমোটিভ কমপ্লিট অটো সেন্টার ওয়ার্কশপে গিয়ে দেখা যায় হিরো আলমকে উপহার দেওয়া গাড়িটি পার্ক করা হয়েছে। গাড়ির বাহ্যিক ফিটনেস একেবারেই খারাপ। ভিতরের অংশ জরাজীর্ণ। সিটগুলো ছেঁড়া, ফোম বের হওয়া। সামগ্রিকভাবে গাড়িটি রাস্তা ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত।
ওয়ার্কশপের ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, ‘যখন হিরো আলম গাড়িটিকে অ্যাম্বুলেন্সে পরিণত করার ঘোষণা দেন, তখন আমরা আমাদের ওয়ার্কশপ থেকে বিনামূল্যে গাড়িটিকে অ্যাম্বুলেন্সে পরিণত করার পরিকল্পনা করি। এরপর মোবাইল ফোনে বিষয়টি হিরো আলমকে জানান। তিনি খুশি মনে প্রস্তাব গ্রহণ করেন।
মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘গাড়িটিকে অ্যাম্বুলেন্স করতে প্রায় ২০ দিন সময় লাগবে। কারণ গাড়িটি অনেক পুরনো। অনেক কাজ করতে হবে। বিশেষ করে ডেন্টিং এবং পেইন্টিং। ভিতরের আসনগুলি ফেলে দিতে হবে এবং অ্যাম্বুলেন্সের আসনগুলি নতুন করে সেট করতে হবে। অক্সিজেন সিলিন্ডার ও সাইরেন বসাতে হবে। চাকাও বদলাতে হবে।
গাড়িটি পুরোপুরি ঠিক করতে কত খরচ হবে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান বলেন, “হিসাব এখনও করা হয়নি। যা লাগবে তাই দেব। জনহিতকর কাজে অংশ নেব।
এ প্রসঙ্গে হিরো আলম বলেন, ‘এটা খুবই আনন্দের বিষয় যে ওয়ার্কশপ কর্তৃপক্ষ আমাকে সহযোগিতা করছে। তবে করের পরিমাণ নিয়ে বিআরটিএর সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা হয়নি। আমি যোগাযোগ করব এবং কিছু টাকা কমানোর জন্য অনুরোধ করব।
গত ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। হিরো আলম এই দুটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে সদর আসনে বড় ব্যবধানে হেরে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয় এবং বগুড়া-৪ আসনে মাত্র ৮৩৪ ভোটে হেরে যান।
এই উপনির্বাচনের আগের দিন হবিগঞ্জের চুনারুহাটের শিক্ষক মখলেছুর রহমান ফেসবুক লাইভে এসে হিরো আলমকে তার ব্যবহৃত নোহা মাইক্রোবাস উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেন। নরপতি গ্রামের ওই শিক্ষক সামাজিক মাধ্যমকে বলেন, হিরো আলম বগুড়ার মানুষের মন জয় করেছেন। নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক, সিলেট বিভাগের পক্ষ থেকে হিরো আলমকে তার গাড়ি উপহার দিতে চান তিনি।
বিনোদন জগতে হিরো আলম বর্তমান সময়ে একটি আলোচিত নাম। তিনি একসময় পেশায় ডিশ ব্যবসায়ী ছিলেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তিনি বিভিন্ন ধরনের হাস্যরসাত্মক ভিডিও প্রকাশ করে জনপ্রিয়তা পান। বর্তমান সময়ে তিনি রাজনীতিতে পদার্পণ করেছেন। তিনি সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনায় এসেছেন। তবে ভবিষ্যতে তিনি রাজনীতিতে নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করবেন এমন ঘোষণা দিয়েছেন।