প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সাল আতিক বিন কাদের জামিনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। ফলে আজ তাদের মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শুনানিকালে আসামিদের পক্ষে ছিলেন জয়নুল আবেদীন। আসাদুজ্জামান, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার জামিন শুনানি পরিচালনা করেন। আসামির অসুস্থতা, বয়স, সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে জামিনের আবেদন করেন তারা। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু জামিন বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের ৫ হাজার টাকার জামিনে মঞ্জুর করেন।
মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহদেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, যেহেতু মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুর বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই, তাই এই দুজনের মুক্তিতে কোনো বাধা নেই। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। বৃহস্পতিবার আমরা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিলের আবেদন করব। আশা করছি বৃহস্পতিবার তাদের মুক্তি দেওয়া হবে।
এর আগে এ মামলায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। ওই আদেশের বিরুদ্ধে গত ৬ ফেব্রুয়ারি তাদের আইনজীবী মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করেন। আদালত ১৪ ফেব্রুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেন।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির সাধারণ সভা শুরুর আগে কাকরাইলে দুপুর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সং/ঘর্ষ হয়। পরে সং/ঘর্ষ বিজয়নগর জলের ট্যাঙ্ক ও শান্তিনগর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বেলা ৩টার দিকে বিএনপির সাধারণ সভা ভেঙে যায়। সং/ঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য ও যুবদলের এক ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা নি/হত হয়েছেন। এতে ৪১ পুলিশ ও ২৫ আনসার সদস্য আহত হন। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ২০ সাংবাদিক।
এ ঘটনার পর গত ২৮ অক্টোবর মির্জা ফখরুলকে গুলশানের নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এরপর প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় তাকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত ২ নভেম্বর দুপুর ১টার দিকে গুলশানের একটি বাসা থেকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেফতার করে ডিবি। পরদিন ৩ নভেম্বর সমাবেশ চলাকালে সংঘর্ষে নিহত পুলিশ সদস্যের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। মামলায় তার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে গত ৯ নভেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেফতারের পর মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে ১১টি এবং আমীর খসরোর বিরুদ্ধে ১০টি মামলা হয়। এ মামলা ছাড়া সব মামলায় তারা জামিনে ছিলেন।