বিভিন্ন অপরাধ দমনে দেশে নানা ধরনের আইনের প্রচলন রয়েছে। এমনকি অপরাধীরা রাষ্ট্রীয় ভাবে কেমন ধরনের মানবিক সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন এই বিষয়েও আইন রয়েছে। বর্তমান সময়ে সংবিধানের ৩৬ অনুচ্ছেদ নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে দেশ জুড়ে। এরই সুবাদে এবার এই সংবিধানের ৩৬ অনুচ্ছেদের বিস্তারিত ব্যখ্যা দিলেন আপিল বিভাগ।
সংবিধানের ৩৬ অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকার হিসেবে কোনো ব্যক্তির চলাফেরার যে স্বাধীনতা দেয়া আছে তা পুরোপুরি অবারিত নয় (নন-অ্যাবসলুট) বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। তবে, আইনের সমর্থনে আরোপিত বিধি নিষেধ ছাড়া কোন নির্বাহী আদেশে কারও চলাফেরার স্বাধীনতা খর্ব করা অসাংবিধানিক। গতকাল বুধবার দুর্নীতি মামলার আসামি বা সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে দুদকের আবেদন নিষ্পত্তির পূর্ণাঙ্গ রায়ে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এক রায়ে এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। আপিল বিভাগ রায়ে বলেন, ৩৬ অনুচ্ছেদে যে স্বাধীনতা দেয়া আছে তার মূল উদ্দেশ্য সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা করা। তাই ফৌজদারি অপরাধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে, পাসপোর্ট জব্দ ও বিদেশ যাত্রা আটকানো যাবে। তারপরও যদি কেউ আইনকে পাশ কাটিয়ে বিদেশ যাত্রার চেষ্টা করে, তাহলে আটকানোর পর, তিন কার্যদিবসের মধ্যে আদালতকে জানাতে হবে। কিন্তু, ফৌজদারি অপরাধে কারও নাম এলেই তার বিদেশযাত্রা রোধ করা যাবে না। এর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর সুনির্দিষ্ট বিধি বা আইন প্রণয়ন না করা পর্যন্ত দুর্নীতি মামলার আসামি বা সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির বিদেশ যাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হলে আদালতের অনুমতি নিতে হবে মর্মে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুদকের আবেদন পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করেন আপিল বিভাগ। দেশ ত্যাগে দুদকের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে পৃথক ৫টি রিটে হাইকোর্ট তিনটি রায় ও দুটি আদেশ দেন। ওইসব আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
দেশে দূর্নীতি সহ নানা ধরনের অনিয়মের প্রবনতা মারাত্মক আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এই সকল অপরাধের সাথে যুক্ত ব্যক্তিরা প্রায় সময় নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে শাস্তি থেকে বাঁচতে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে দেশ ত্যাগও করছে। তবে এই সকল অপরাধী ব্যক্তিদের শাস্তি ও স্বাধীন ভাবে চলাফেরার প্রসঙ্গে সংবিধানে বিস্তারিত উল্লেখিত রয়েছে।