মিঠু স্বাস্থ্য খাতের একজন কুখ্যাত দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে তার কয়েকশ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে। এই সম্পদ জব্দের ধাক্কাসামলাতে না সামলাতেই বাংলাদেশে তার ৭৪ কোটি টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়। অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন মিঠু। সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। বাংলাদেশে এসেই ফাঁদে পড়েন তিনি। এখন গোয়েন্দা নজরদারিতে। এই কুখ্যাত দুর্নীতিবাজ মিঠু যেকোন সময় গ্রেফতার হতে পারে।
সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন মিঠুসহ প্রায় এক হাজারের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে তাদের তদন্ত করছে। দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকায় তার স্থাবর-অস্থাবরসহ প্রায় ৭৪ কোটি টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুদকের উপ-পরিচালক মসিউর রহমান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পুলিশের বিশেষ শাখা এসবিতে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সিটি করপোরেশনের সিনিয়র অধিবেশনের অনুমতি নিয়ে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
মিঠু স্বাস্থ্য খাতের সবচেয়ে বড় দুর্বৃত্তদের একজন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠিত হলে মিঠু তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হন এবং এরপরই তিনি স্বাস্থ্য খাতে একচেটিয়া আধিপত্য তৈরি করেন। মিঠুর বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি সিন্ডিকেট ও যন্ত্রপাতি না দিয়ে বিল তোলাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। মিঠুর বিরুদ্ধে এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করলেও অজ্ঞাত কারণে সে সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত থেকে তিনি রেহাই পেয়ে যান। এখন মিঠুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে মিঠুর নিউইয়র্কে একটি বাড়ি ও মোটেলসহ সম্পত্তি জব্দ করা হয়। এই বাজেয়াপ্তির বিরুদ্ধে তিনি আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়াতেও মিঠুর বিপুল সম্পদ রয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে আসেন তিনি।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশে আসার মূল কারণ ছিল বাংলাদেশে তার স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি বিক্রি করা। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে তার সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত হওয়ার পর বাংলাদেশেও বিপদে পড়তে পারেন বলে মনে করেন তিনি।আর এই কারণেই দেশে এসে সমস্ত সম্পদ বিক্রির পায়তারা করেন। মিঠু দেশে আসার খবর পাওয়া মাত্রই গোয়েন্দারা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন এ বিষয়ে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেয়।আর এর ফলেই এখন গোয়েন্দার জালে ফেঁসে গেছেন।
বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে যে বিথু এখন একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার বাসায় অবস্থান করছেন এবং যে কোনো উপায়ে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করতে পারেন। তবে একাধিক গোয়েন্দা সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে যে মিঠু এখন গোয়েন্দা জালে রয়েছে এবং যে কোনো মুহূর্তে মিঠুকে গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা রয়েছে।