গোটা পৃথিবী জুড়ে অনেক নামি-দামি কোম্পানি রয়েছে যারা কিনা গোটা বিশ্বেই নিজেদের আধিপত্য বিস্তার লাভ করতে সক্ষম হয়েছে। এবং উপার্জন করছে বিপুল পরিমানের অর্থ। তবে এই সকল বিশ্ব জুড়ে ব্যবসায় করা কোম্পানি গুলোর বিষয়ে নতুন চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তিতে সম্মতি জানিয়েছে বিশ্বের ১৩৫টি দেশ। প্রকাশ্যে উঠে এলো বিস্তারিত।
বিশ্বের বড় বড় কোম্পানিগুলোর জন্য সর্বনিম্ন বৈশ্বিক করের হার ১৫ শতাংশ নির্ধারণ এবং তাদের জন্য কর এড়ানো কঠিন করার জন্য যুগান্তকারী একটি চুক্তিতে একমত হয়েছে বিশ্বের ১৩৫টি দেশ। এই চুক্তি প্রতিযোগিতায় সমতা আনবে বলে মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আজ শুক্রবার ১৩৫টি দেশ এই চুক্তিতে সাক্ষর করেছে। এই চুক্তির লক্ষ্য হল গত ৪০ বছর ধরে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে অল্প ট্যাক্সে বিনিয়োগ করার যে সুবিধা দিয়ে আসা হচ্ছিল তা বন্ধ করা। অনেক রাষ্ট্রই দেশে চাকরি সৃষ্টি করার লক্ষ্যে গত চার দশক ধরে বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে খুব অল্প ট্যাক্সে বিনিয়োগ করার সুযোগ দিয়েছে। এবার সে সুযোগ শেষ হতে চলেছে। গত চার বছর ধরেই এই বিষয়ে আলোচনা চলে আসছিল। অবশেষে এই বিষয়ে একমত হল বিশ্ব। তবে যে ১৫% সর্বনিম্ন বৈশ্বিক করের ব্যাপারে একমত ১৩৫ দেশ তা এখনো শিল্পোন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। শিল্পোন্নত দেশগুলোতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগ করার জন্য রাষ্ট্রকে ২৩.৫ শতাংশ হারে কর দিতে হয়।
এই চুক্তির লক্ষ্য হল কম করের দেশগুলোতে বড় বড় কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের প্রবণতায় লাগাম টানা। গত কয়েক দশকে একই সঙ্গে বিভিন্ন দেশে ব্যবসা করতে সক্ষম বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর উত্থানের প্রেক্ষিতে এই চুক্তি করা হয়েছে। ১৪০টি দেশের মধ্যে ১৩৬টি দেশ এই চুক্তিকে সমর্থন করেছে। কেনিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা আপাতত এড়িয়ে গেছে। প্যারিস ভিত্তিক অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) এই আলোচনার নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারা বলেছে যে, এই চুক্তি বিশ্ব অর্থনীতির ৯০ শতাংশকে কভার করবে। চুক্তির কেন্দ্রীয় বিষয় হল ন্যূনতম করপোরেট কর হার ১৫% এবং সব দেশের সরকারকে বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানির মুনাফার একটি বৃহত্তর অংশ কর হিসেবে দেওয়া।
বিশ্বের অধিকাংশ কোম্পানি গুলো কর ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করে থাকে। এক্ষেত্রে তারা নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করে থাকে। প্রায় সময় কর ফাঁকি প্রসঙ্গে এমন অনেক তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। তবে এই কর ফাঁকি প্রতোরোধে এবং বিশ্বের নামি-দামি কোম্পানি গুলোর গতিপথ প্রতিরোধে নতুন চুক্তি এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহন করেছে বিশ্বের ১৩৫টি দেশ।