দীর্ঘদিন ধরে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনকারী বাংলাদেশ কল্যান পার্টি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে। তিনটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে ‘যুক্ত ফ্রন্ট’ নামে একটি নতুন জোট নিয়ে তারা অংশ নেবেন।
এই ঘোষণার পর দলের প্রধান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমকে ঘিরে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই তাকে ‘জাতীয় বেঈমান’ বলছেন।
সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে অংশ নিয়ে বলেন, জোট ছাড়ার আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তার কথা হয়েছিল।
তিনি বলেন, বিএনপির নেতৃত্বের সমালোচনা করার অধিকার আমার নেই। আমি আমার জোটের কথা বলতে পারি। জোট ছাড়ার তিন দিন আগে ২০ নভেম্বর রাত ৮টা ১০ মিনিট থেকে ৮টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও আমাদের জোটের প্রধান নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে কথা হয়।
তিনিও শ্রদ্ধা ও আশা নিয়ে কথা বলেছেন। আমিও শ্রদ্ধার সাথে কথা বললাম। আশার কথা বললাম। আমি সুবিধা-অসুবিধার কথা বলেছি। যা প্রকাশ্যে আসা উচিত নয়।
ইব্রাহিম বলেন, কারণ এক দলের প্রধান থেকে শুরু করে অন্য জোটের প্রধান সবকিছুই প্রকাশ্যে করার দরকার নেই। তাদের (বিএনপি) নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। কারণ প্রতিটি দলেরই সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে।
সরকারের বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ আছে। আপনাদের জোটের প্রধান নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেননি। তবে বিদেশ থেকে ডাক্তারদের চিকিৎসা দেওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। যে মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার প্রতিবাদ করছি। আমি অতীতেও এর বিরোধিতা করেছি এবং করব। তাদের মধ্যে যদি কোনো সংকট থাকে পরামর্শ দিতে পারব।
তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলার সময় জোট ছাড়ার কোনো আভাস দিয়েছিলেন কিনা?
এমন প্রশ্নের জবাবে ইবরাহিম বলেন, না ছাড়ার কোনো আভাস দেইনি। উনিও এমন প্রশ্ন করেননি। আলাপটা রাজনৈতিক আলাপ। দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত দুবার কথা হয়েছে। একদিন জুম মিটিংয়ে, আর সবশেষ তিন দিন আগে। তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলার পর মহাসচির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বেশ কিছু অনুরোধ করেছিলাম। পরে আমাকে মির্জা ফখরুল জিজ্ঞেস করেছিলেন— ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আলাপ হয় কিনা। আমি বলেছিলাম, দুই বছর আগে আলাপ হয়েছিল। পরে ঈদে তারেক রহমানের সঙ্গে আলাপ করার সুযোগ পাইনি। পহেলা বৈশাখসহ অন্য বিশেষ দিনেও পাইনি।
এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোটি কোটি মানুষ আছেন যারা তারেক রহমানকে সম্মান করবেন। অন্যদিকে লাখ লাখ মানুষ আছে যারা তারিক রহমানকে পছন্দ করেন না। এটা নিয়েই বাঁচতে হবে।
সর্বশেষ তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলার সময় নিজে কী জানতেন যে ভোটে আসবেন?
এ প্রশ্নের জবাবে ইব্রাহিম বলেন, আমাদের বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মধ্যে অভ্যন্তরীণ আলাপ-আলোচনা চলছিল। আমি কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। দলের সিনিয়র নেতারা আমাকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন। দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব। আমি তারিক রহমানের সাথে কথা বলেছিলাম, তখন পুলসিরাতের সাঁকোর মতো দাঁড়িয়ে ছিলাম। নির্বাচনে যাব কিনা যাব না?