গত দুই বছরে অনেক বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগে যোগ দান করেছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে নির্বাচনে জয় লাভ করার জন্য আওয়ামী লীগে যোগদিয়েছে অনেক নেতাকর্মীরা। এমনি অভিযোগ অনেকের। ফের পৌরসভা নির্বচনের পাঁচ দিন আগে এক প্রার্থির আওয়ামী লীগে যোগদান করাকে কেন্দ্র করে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়।
নির্বাচনের মাত্র পাঁচ দিন আগে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম চৌধুরী আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। গতকাল বিকেলে ক্ষেতলাল উপজেলা আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে দলে স্বাগত জানান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুজ্জামান তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সরদার। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
যোগদান অনুষ্ঠানে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী জুলফিকার আলী চৌধুরী আমাকে ওয়ার্ডের কোথাও গণসংযোগ করতে দিচ্ছেন না। আমি যেখানেই যোগাযোগ করতে যাচ্ছি সেখানেই আমাকে ব্লক করা হচ্ছে। আমি কোন দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম না। এ কারণে কেউ আমাকে সাহায্য করছে না। অনেক আগেই আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। সময়ের অভাবে উপস্থিত হতে পারেননি। আমি আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছি। এখন আমার কোন ভয় নেই। আমি আশা করি আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মী ভোটে আমার পাশে থাকবেন। আমি জিতব, ইনশাআল্লাহ।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনোয়ারুজ্জামান বলেন, নজরুল ইসলাম চৌধুরীর দলে যোগদান করে আজ থেকে ক্ষেতলাল পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড স্বাধীন হয়েছে। এতদিন ওয়ার্ড নিয়ন্ত্রণে ছিল। আপনারা সবাই নজরুল ইসলামকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। নজরুল ইসলাম এখন থেকে নায়কের ছদ্মবেশে ভোটের প্রচারণা চালাবেন। গণসংযোগে কেউ বাধা দিলে তাকে প্রতিহত করা হবে।’
আমি আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছি। এখন আমার কোন ভয় নেই।
নজরুল ইসলাম চৌধুরী, ক্ষেত্রলাল পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী
নির্বাচনের মাত্র পাঁচ দিন আগে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে দলে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারুজ্জামান বলেন, নজরুল ইসলাম চৌধুরীর আওয়ামী লীগে যোগদান নিয়ে অনেক দিন ধরেই আলোচনা চলছিল। তবে বিভিন্ন কারণে সময় ও সুযোগ পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, নজরুল ইসলাম চৌধুরীর প্রতিদ্বন্দ্বী জুলফিকার আলী চৌধুরীও আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। তবে দল থেকে নজরুল ইসলামকে সমর্থন দেওয়া হচ্ছে। তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেন না বলে জানিয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
এদিকে নজরুল ইসলাম চৌধুরীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অপর কাউন্সিলর প্রার্থী জুলফিকার আলী চৌধুরী বলেন, আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলাম। গত নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে প্যানেল মেয়র হয়েছি। আমি নজরুল ইসলামকে গণযোগাযোগ থেকে বিরত করিনি। জনপ্রিয়তা না থাকলে দলে যোগ দিয়ে কোনো লাভ হবে না।
ক্ষেতলাল পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৭ জুলাই। সাবেক মেয়র সিরাজুল ইসলাম ওরফে বুলু প্রথমে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত হন। একদিন পর তার দলীয় মনোনয়ন বাতিল করে ক্ষেতলাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সরদারকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন সিরাজুল ইসলাম। তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম ও নবীউল ইসলাম তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম সরদার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
এরআগেও কুসিক নির্বচনে অংশ গ্রহন করা সাক্কু নির্বাচনে নামার পূর্বে বিএনপি থেকে পদ্যত্যাগ করেন। তবে যখন তিনি জয় লাভ করতে পারেনি তখন সে আবার বিএনপিতে ফিরে যেতে চান বলে জানান। এ বিষয় গুলো নিয়ে সারাদেশের চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে।