সম্প্রতি ইভ্যালি ইস্যুতে তাহসান খানের নাম জড়ানোর সাথে সাথেই যেন পরিস্থিতি আরও বেশি ঘোলাটে হয়ে গেছে। একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে তার মুখ দিয়ে। গতকাল তার সাক্ষাৎকারে তিনি সম্পূর্ণ কথা বলেননি। অনেক কথা তিনি বলতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। অনেক আতঙ্কের ভিতরে ছিলেন তিনি। তবে এরই মাঝে তিনি বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন যেটা আসলেই উদ্বেগজনক।
দেশের জনপ্রিয় তিন অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে। সাদ স্যাম রহমান নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক গত ৪ ডিসেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ মামলা করেন। মামলার তদন্তের নথি সম্প্রতি রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় এসেছে।
এই মামলায় আসামি করা হয়েছে তাহসান রহমান খানকে। তবে তাহসান বলছেন তিনি এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সম্পৃক্ত হয়েছে এটা দেখেই। এ বিষয়ে তাহসান কালের কণ্ঠ অনলাইনে গত শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি যে বছর জানুয়ারিতে চুক্তিবদ্ধ হই, তার আগের বছর জানুয়ারিতে আমাকে অ্যাপ্রোচ করা হয়। আমি যখন ডিনাই করছিলাম। তখন তারা আমাকে বলল, ‘আমরা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আছি। আমরা র্যাবের চলচ্চিত্র অপারেশন সুন্দরবনের সঙ্গে আছি। আমরা আইসিটি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি…, তাহলে কেন ডিনাই করছেন?’
দেশের জনপ্রিয় এই তারকাকে নিজেদের দলে ভেড়াতে এমনই বিশ্বস্ত কিছু সূত্র ব্যবহার করা হয়।
তাহসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তারা আরও তিনটা নাম বলেছে, যা আমি আপানাকে বলতে পারব না, তাহলে হয়তো আমি বাংলাদেশেই থাকতে পারব না। তাঁরা এতটাই প্রভাবশালী যে তাঁদের নাম বলা সম্ভব নয়। তাঁদের অ্যাডভার্টাইজিং ফার্মের নামও বলতে পারব না। যখন দেখছি এই কোম্পানি তাদের অ্যাডভার্টাইজিং ফার্ম, এই মানুষগুলো তাদের সঙ্গে আছেন, এই প্রতিষ্ঠানে তো আমার আস্থা পাওয়া স্বাভাবিক। যে মানুষগুলোর নাম বলে আমাকে জয়েন করানো হয়েছে, তাঁদের নাম বলা তো সম্ভব না। কারণ, তাঁরা অসম্ভব ক্ষমতাধর মানুষ।’
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তাহসান, মিথিলা ও শবনম ফারিয়া ইভ্যালির বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন। তাদের উপস্থিতি এবং তাদের বিভিন্ন প্রমোশনাল কথাবার্তার কারণে আস্থা রেখে বিনিয়োগ করেন সাদ স্যাম রহমান। এসব তারকার কারণে মামলার বাদী প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
গত ৪ ডিসেম্বর সাদ স্যাম রহমান নামের ইভ্যালির এক গ্রাহক রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় মামলাটি করেন। তবে জানাজানি হয় গত বৃহস্পতার গভীর রাতে। এঁদের মধ্যে তাহসান ইভ্যালির শুভেচ্ছা দূত, মিথিলা ফেস অব ইভ্যালি লাইফস্টাইলের শুভেচ্ছা দূত আর শবনম ফারিয়া ছিলেন প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা।
জানতে চাইলে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান গতকাল শুক্রবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ইভ্যালির একজন গ্রাহক আদালতে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছেন। ৯ আসামির মধ্যে তাহসান, শবনম ফারিয়া ও মিথিলা রয়েছেন। তাঁরা এই মামলার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর আসামি। মামলার তদন্ত চলছে। ৯ আসামিই পুলিশের নজরদারিতে রয়েছেন। যেকোনো সময় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
মামলার এজাহারে বাদী সাদ স্যাম রহমান অভিযোগ করেন, ইভ্যালিতে তিন লাখ ১৮ হাজার টাকায় মোটরসাইকেল কেনার অর্ডার করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁকে পণ্য সরবরাহ করা হয়নি, টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি। এভাবে চটকদার বিজ্ঞাপন ও বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে হাজারো গ্রাহককে পথে বসিয়েছে ইভ্যালি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, তাহসান, মিথিলা ও শবনম ফারিয়া ইভ্যালির বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন। তাঁদের উপস্থিতি এবং বিভিন্ন প্রমোশনাল কথাবার্তায় আস্থা রেখে বিনিয়োগ করেন সাদ স্যাম রহমান। এসব তারকার কারণে মামলার বাদী প্রতারিত হয়েছেন।
যোদিও ভোক্তার দাবি এসব কিছুর সাথেই তাহসান খান সহ বাকি ৯ জন সম্পৃক্ত। তার দাবি এইসব তাকা তারাই ভাগ বসাই। তবে এখনো পর্যন্ত পুলিশ কি পদক্ষেপ নিচ্ছে সে ব্যাপারে জানা যায়নি। পুলিশ তাদের এখনো পর্যন্ত কোন জেরাও করেনি। পরবর্তীতে পুলিশ ইনভেস্টিগেশন শুরু করলে হয়তো আসল খবর জানা যাবে।