দেশের আলোচিত ও সমালোচিত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে অন্যতম এক নাম মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে ‘সাহেদ করিম’। সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও সরকারের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করে কোটি কোটি আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের কর এক মামলায় বছর কয়েক আগে গ্রেপ্তার হন তিনি। আর এরপরই তদন্ত চালাতেই তার বিরুদ্ধে উঠে আসে একের পর এক অভিযোগ।
আর এদিকে এবার পদ্মা ব্যাংকের গুলশান করপোরেট শাখার কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় সাহেদকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন প্রশ্নে রুল সঠিক ঘোষণা করেন।
আদালতে শহীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ মাসুদ-উল-হক। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, জামিনের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ বাদী হয়ে ২০২০ সালের ২৭ জুলাই সাহেদসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি শাহেদ পদ্মা ব্যাংকের গুলশান কর্পোরেট শাখায় রিজেন্ট হাসপাতালের নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন। অ্যাকাউন্ট খোলার দিন সাহেদ এক কোটি টাকার এফডিআর বন্ধক রেখে দুই কোটি টাকা ঋণের আবেদন করেন।
মামলায় আরও বলা হয়, ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা না দেখে শাহেদের আবেদন পরদিন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়। ওই বছরের ১৩ জানুয়ারি সাহেদের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে দুই কোটি টাকার ঋণ অনুমোদনের জন্য ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান বাবুল চিশতীর কাছে উপস্থাপন করা হলে তিনি তা অনুমোদন করেন।
এরপর ১৯ জানুয়ারি এমআরআই মেশিন সরবরাহকারী একটি কোম্পানিকে ২ কোটি টাকার পে-অর্ডার দেওয়া হয়। ২১ জানুয়ারি শাহজালাল ব্যাংকের উত্তরা মহিলা শাখা থেকে টাকা উত্তোলন করা হলেও রিজেন্ট হাসপাতালের জন্য কোনো এমআরআই মেশিন কেনা হয়নি বলে মামলার বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে। শাহেদ ঋণের কোনো কিস্তি পরিশোধ করেননি। এফডিআরের এক কোটি টাকা সমন্বয়ের পর ব্যাংক এখন সাহেদের কাছে বাকি এক কোটি টাকার সুদসহ মোট দুই কোটি ৭১ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে।
দুদকের তদন্তের তথ্য তুলে ধরে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দুই কোটি টাকা ঋণ অনুমোদনের আগে শাহেদ ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি পদ্মা ব্যাংকের বকশীগঞ্জ শাখায় বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স কোম্পানির অ্যাকাউন্টে ৩৫ লাখ টাকা জমা দেন। এ টাকা উত্তোলন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতী।
এদিকে সাহেদকে জামিন দেয়া নিয়ে রীতোমতো প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে দুদকের এক আইনজীবী।