কাতারের জমে উঠেছে ফুটবল বিশ্বকাপ।এই বিশ্বকাপে পর্তুগাল একের পর এক জয়ের মালা পরে যাচ্ছে। পর্তুগালের অন্যতম জনপ্রিয় খেলোয়াড় রোনালদো। তিনি তার পারফরমেন্সে মাধ্যমে মাঠ কাঁপিয়ে চলেছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই তাকে একাদশ থেকে বাদ দেয়া হলো সুইজারল্যান্ডের সাথে ম্যাচ থেকে। তবে ঠিক কী কারণে তাকে বাইরে রাখা হলো এ নিয়ে অনেকের নিকট প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। রোনালদো দলের একজন গুরুত্বপূর্ন খেলোয়াড় হওয়ার কারনে এমন প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক।
সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচ শুরুর আগেই কানাঘুষা ছিল- গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে কি একাদশে থাকবেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো? অনিশ্চয়তার গুজব বাস্তবে রূপান্তরিত হয়েছিল যখন দেখা গেল যে পর্তুগালের দীর্ঘদিনের কাণ্ডারি সত্যিই একাদশ থেকে অনুপস্থিত। ২০০৪ সালের পর এটাই প্রথম বড় টুর্নামেন্টে বেঞ্চে বসে থাকলো রোনালদো! তবে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের দিন কোচ ফার্নান্দো সান্তোসের সঙ্গে ঝামেলায় পড়ে একাদশে জায়গা হারিয়েছেন তিনি? পর্তুগাল কোচ অবশ্য বলছেন অন্য কথা।
দীর্ঘ ১৮ বছর বা ৬৭৪৭ দিন পর বড় টুর্নামেন্টের বেঞ্চে রোনালদো! ২০০৪ ইউরোতে রাশিয়ার বিপক্ষে বেঞ্চে ছিলেন রোনালদো। এরপর মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগ পর্যন্ত কোনো বড় টুর্নামেন্টে রোনালদোকে আর বেঞ্চে বসতে হয়নি।
ইলেভেনে রোনালদোর স্থলাভিষিক্ত যিনি ইতিহাস গড়লেন। পর্তুগালের জার্সিতে প্রথম একাদশে খেলেছেন গঞ্জালো রামোস। এবারই প্রথম বিশ্বকাপে একাদশ থেকে খেললেন তিনি। বেনফিকার ২১ বছর বয়সী তারকা দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক করেন।
তারপরও ম্যাচ জুড়ে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা রোনালদোর একাদশে না থাকা। তাই ম্যাচ শেষে কোচ সান্তোসকে যতটা না কথা বলতে হয়েছে রামোসের হ্যাটট্রিক নিয়ে, তারচেয়ে বেশি রোনলদোর বাদ পড়া নিয়ে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সান্তোস বলেন, ‘এখনও কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া বাকি আছে। রোনালদোর সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুবই ভালো, সবসময়ই ছিল। আমি তাকে ১৯ বছর বয়স থেকে চিনি, যখন আমি ২০১৪ সালে পর্তুগালে আসি তখন সে জাতীয় গোলে তারকা হয়ে উঠছিল। রোনালদো ও আমার মধ্যে কোনো ভুল বোঝাবুঝি নেই। আমি এখনও তাকে দলের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার মনে করি।’
দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে রোনালদোর খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে দ্বিতীয়ার্ধে তাকে মাঠের বাইরে নিয়ে যান কোচ সান্তোস। কোচের সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেননি পর্তুগিজ অধিনায়ক। মাঠ ছাড়ার সময় তার আচরণ কোচের কাছে খুব একটা ভালো লাগেনি। রোনালদোকে বাদ দেওয়ার পেছনে কি এই ঘটনার হাত আছে?
এমন প্রশ্নের জবাবে সান্তোস সাফ জানিয়ে দেন, দল থেকে তাকে বাদ দেওয়ার সঙ্গে ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, ‘শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়টি ইতিমধ্যেই সমাধান করা হয়েছে। রোনালদো অতীতে কী করেছেন তাও বিবেচনাটা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সেরা ফুটবলারদের একজন। আর আমাদের এক সঙ্গেই কাজটা করতে হবে।’
উল্লেখ্য, চলমান এই মৌসুমে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে রোনালদোকে জনপ্রিয় ফুটবল ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের স্কোয়াড হতে বাদ দেয়া হয়েছিল। এদিকে গোল্ডেন বুটের দৌড়ে এগিয়ে থাকলেও হঠাৎ করে সুইজারল্যান্ডের ম্যাচ থেকে বাদ পড়ায় সেটা ক্ষীন হয়ে পড়েছে। এদিকে রোনালদোকে হঠাৎ করে মাঠের বাইরে রাখায় তার ভক্তরা অস”ন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ থাকে বাদ দেয়ার বিষয়টি অনেককে হতাশ করেছে।