সম্প্রতি বিদ্যুৎ সংকটে তৈরী হওয়া ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয় বিভিন্ন মহলে। পরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার এক পর্যায় জানা যায় দেশে বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের মূল বৃদ্ধি পাওয়া এমন সংকটের তৈরী হয়েছে। বিশেষ করে ইউক্রেন-রাশিয়া যু/দ্ধের কারনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক অবস্থার উপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। যার ফলে উন্নোয়নশীল দেশে গুলো অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে। সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহার কমাতে বাধ্য হওয়ায় প্রসঙ্গে যা জানা গেল।
দেশে জ্বালানি তেলের প্রায় পুরোটাই আমদানি করা হয়। এর বাইরে কয়লা ও গ্যাস আংশিক হারে আনতে হয়। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে বিশ্ববাজারে উচ্চমূল্যের কারণে আমদানি ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। অন্যদিকে নতুন দুশ্চিন্তা হিসেবে সামনে এসেছে ডলার সঙ্কট। ফলে এক ধরনের ত্রিমুখী চাপে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ব্যবহার কমাতে বহুমুখী সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় সরকার। চলমান সংকট মোকাবেলায় জ্বালানি সাশ্রয়ের কোনো বিকল্প সরকারের কাছে ছিল না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ম তামিম বলেন, বর্তমানে জ্বালানি মূল্য বিশ্বব্যাপী যে হারে বেড়েছে, তাতে আমাদের এলএনজির ওপর যে নির্ভরশীলতা তার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের এনার্জি মূল্যটা অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি শিগগিরই এর সমাধান হবে। আমি খুব আশাবাদী যে খুব শীঘ্রই তেল ও কয়লার দাম কমবে।
বর্তমানে সরকার দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির বাইরে খোলা বাজার থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ রেখেছে। কারণ, ইউনিটপ্রতি খরচ বেড়েছে ১০ গুণের মতো। ফলে কয়েক মাস ধরে বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ কমে গেছে। যা উৎপাদন কমেছে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াটে।
এই সংকটের কিছু অংশ তেলচালিত সব কারখানা চালু রেখে মেটানো হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্তে সেখান থেকেও উৎপাদন কমবে। বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের সংগঠনও মনে করছে, বর্তমান বাস্তবতায় সরকারের হাতে এই সিদ্ধান্তের কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান করিম বলেন, রাষ্ট্র যদি ডিজেল চালিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচের সঙ্গে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়ায় এবং ডলারের দাম আরও বাড়ে; তাহলে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। এই পরিস্থিতিতে যাওয়ার আগে আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সচিবালয়ে বলেন, শিল্প উৎপাদনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়াই সরকারের সিদ্ধান্ত। আমরা চাই না শিল্প এলাকা বন্ধ থাকুক। আমাদের এখন দেখতে হবে আমরা কতটা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারি।
প্রসঙ্গত, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে যে সংকটের তৈরী হয়েছে তা নিরসনে সরকার এ সব সিদ্ধান্ত গ্রহন করত বাধ্য হয়েছে বলে জানা যায়। জানা যায় আন্তজার্তিক কারনেই বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে এ সব সমস্যার তৈরী হয়েছে।