হঠাৎ করেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোষ্ট দিয়ে সমগ্র দেশ জুড়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। পোষ্টিতে তিনি জানিয়েছেন ব্যাংকের একটি চেকে বাংলায় ডিসেম্বর লেখায় তার চেকটি প্রত্যাখান করা হয়েছে। তবে ব্যাংকটি নিজেদের ভুল স্বীকার করে চেকটির অর্থ প্রদান করেছে।
চেকে মাসের নাম বাংলা অক্ষরে ‘ডিসেম্বর’ লেখায় তা ফেরত দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বিষয়টিতে আক্ষেপ প্রকাশ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ফেসবুকে এ নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেই স্ট্যাটাস নিয়ে যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে তখন ফের আরেকটি স্ট্যাটাস লিখলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী। চেকটি ভাঙানো গেছে জানিয়ে সেই স্ট্যাটাসের কমেন্টে মন্ত্রী জানালেন, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তার কাছে ক্ষমা চেয়েছে। পাশপাশি যারা তার স্ট্যাটাস নিয়ে রসিকতা করেছেন তাদের একহাত নিয়েছেন মন্ত্রী। বেলা ১২টার দিকে দেওয়া স্ট্যাটাসের কমেন্টে মোস্তাফা জব্বার লিখেছেন, ‘আপনারা অনেকেই আমার দুর্দশায় সংহতি প্রকাশ করেছেন। ধন্যবাদ। কেউ কেউ হা হা করেছেন-তাহারা “কাহার জন্ম নির্ণয় না জানি”। সুখবর হলো অবশেষে চাপে পড়ে চেকটির কোন পরিবর্তন ছাড়াই টাকা দেয়া হয়েছে ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছে। তারা জানিয়েছে আর কখনও এমন ভুল বা বাংলা হরফ নিয়ে কোন বিভ্রান্তি হবে না।’ ঘটনাটি ব্যাংকের ওই শাখার কর্মকর্তাদের মানসিকতার কারণে ঘটেছে বলে জানান তিনি।
এর আগে আজ বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সেখানে ব্যাংকে চেক ভাঙানোর বিষয়ে নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানান। লেখেন, ‘মন চাইছে আ/ত্ম/হ/ত্যা করি। একটি চেকে আমি ডিসেম্বর বাংলায় লিখেছি বলে কাউন্টার থেকে চেকটি ফেরত দিয়েছে। কোন দেশে আছি?’ এমন স্ট্যাটাস কেন দিলেন সে প্রসঙ্গে মন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি চেকে বরাবরই মাসের নাম বাংলায় লিখি। মতিঝিলের প্রিন্সিপাল শাখায় এ নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। এবারের চেকেও আমি তারিখটি লিখেছি ‘০২ ডিসেম্বর, ২০২১’। এটি ছিল বেয়ারার চেক। যাকে চেকটি দিয়েছি, তিনি ব্যাংকটির এলিফ্যান্ট রোড শাখায় জমা দিতে গিয়ে প্রথমে ব্যর্থ হন। মাসের নাম বাংলায় লেখার চেকটি ফেরত দিয়েছেন ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা। তিনি বাসায় ফিরে আমাকে বিষয়টি অবহিত করেন। পরে আমি যোগাযোগ করায় চেকটি অনার হয়।’ কোনো প্রতিষ্ঠানকে খাটো করতে স্ট্যাটাসটি দেনটি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভাষার মর্যাদা রক্ষায় স্ট্যাটাসটি দিয়েছি। বাংলাদেশই একমাত্র ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র। ভাষার জন্যই এই রাষ্ট্রের জন্ম। আগে প্রযুক্তিগত দিক থেকে বাংলা কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও এখন সেই অবস্থা নেই।’
বাংলাদেশ একটি স্বাধীন এবং গনতান্ত্রিক দেশ। এই দেশের মাতৃভাষা বাংলা। এমনকি ভাষার জন্য দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করেছে এই দেশটি। গোটা পৃথিবীতে ভাষার জন্য লড়াই করার এমন ঘটনা বিরল। সেই দেশেই বাংলা লেখায় চেক প্রত্যাখান হয়। এই ঘটনায় আক্ষেপ জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।