তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এএসএম নাসির উদ্দিন এলান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ গনমাধ্যকে এই তথ্য জানান, রোববার সন্ধ্যার পর তারা জামিনে মুক্তি পান।
তিনি জানান, বিকেলে জামিনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেয়ে তাদের যাচাই-বাছাই করা হয়। সন্ধ্যা ৭টার কিছু পরে তারা জামিনে মুক্তি পান।
জেল সুপার জানান, ১৪ সেপ্টেম্বর তারা কারাগারে আসেন। প্রায় এক মাস কারাগারে ছিলেন।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে অভিযানে নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর মামলায় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এএম জুলফিকার হায়াত তাদের দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে এ মামলায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
পরে গত ১০ অক্টোবর সাজার বিরুদ্ধে আদিলুর ও নাসিরের আপিল গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।
সেই সঙ্গে রুহুল আমিন নামে তাদের এক আইনজীবী ওই দিন বলেন, ১০ হাজার টাকা জরিমানা স্থগিত করে তাদের জামিন দেওয়া হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শাহবাগে গণজাগরণ আন্দোলনে সাড়া দিয়ে মাঠে নামে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজেত ইসলাম।
৫ মে, ২০১৩ তারিখে হেফাজত সারাদেশ থেকে সংগঠনের কর্মী ও মাদ্রাসা ছাত্রদের ঢাকায় জড়ো করে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয়।
দিনভর সরকারের বারবার আহ্বানেও তারা ওই স্থান না ছাড়ায় রাতে সমন্বিতভাবে অভিযান চালিয়ে তাদের সরিয়ে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সেই অভিযানে ৬১ জন নিহত হয়েছিল, পরে ‘অধিকার’ তাদের এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে; যদিও পুলিশের দাবি, রাতের অভিযানে কেউ মারা যাননি, আর দিনভর সংঘাতে নিহতের সংখ্যাটি ১১।
রাইটস রিপোর্টে প্রকাশিত সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিলে ওই বছরের ১০ আগস্ট গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে জিডিটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্বে থাকা আইনজীবী আদিলুর মামলা দায়েরের দিন ১০ আগস্ট রাতে গ্রেপ্তার হন। অধিকারের অফিসেও তল্লাশি চালায় পুলিশ। দুই মাস পর জামিনে মুক্তি পান আদিলুর। এলানও আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান।
ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর আদিলুর ও ইলানের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। পরদিন মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকা সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাজা ঘোষণার পর দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংগঠন তাদের মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দেয়।