সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া চিত্রনায়ক জায়েদ খান এবং ওমর সানির মধ্যে সৃষ্ট অপ্রীতিকর ঘটনায় মৌসুমী ওমর সানির সাংসারিক বিষয় নিয়ে সম্পর্কের মাঝে চিড় ধরেছে। এদিকে জায়েদ খান সম্পর্কে ওমর সানী এবং তার ছেলে ফারদিন অনেকটা পরিষ্কার করে অভিযোগ জানিয়েছেন যে, তার কারণেই তাদের পরিবারে অশান্তি বাতাস বইছে। তাদের দুজনেরই অভিযোগ, বেশ লম্বা সময় ধরে অভিনেত্রী মৌসুমীকে উত্তপ্ত এবং বিরক্ত করছে জায়েদ খান।
২৬ বছর হলো বিয়ে করেছেন ওমর সানি-মৌসুমী। সোমবার তাদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য সামনে আসে তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে।
জানা গেছে, রাজধানীর গুলশানের একটি বাসায় একই ছাদের নিচে বসবাস করলেও গত দেড় বছর ধরে তাদের মধ্যে এক ধরনের দূরত্ব রয়েছে।
দুই বছর আগেও জায়েদ-সানির সম্পর্ক ছিল ‘সাপে নেউলের’ মতো। গত বছরের ডিসেম্বরে শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা গাড় হয়। চলচ্চিত্রেও একসঙ্গে কাজ করেছেন তারা। এবার জায়েদ খানকে কেন্দ্র করে পারিবারিক কলহে জড়িয়ে পড়েন মৌসুমী-ওমর সানি।
তাদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, দম্পতির বরফ গলতে সময় লাগবে। মৌসুমী-সানীর সন্তান ফারদিন ও ফাইজা বাবা-মায়ের দূরত্ব কমানোর চেষ্টা করছেন।
সূত্র জানায়, মৌসুমীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে ডিপজলের ছেলের বিয়েতে গিয়ে অভিনেতা ওমর সানি জায়েদ খানকে চড় মা”রেন। তিনি শিল্পী সমিতিতেও গিয়ে তার নামে অভিযোগ করেন।
এমন সময় মুখ খুললেন মৌসুমী, যখন ওমর সানির অভিযোগের পর দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। গতকাল সোমবার ওমর সানি আসলে মিথ্যা বলছেন এমনটি প্রমানিত হয় মৌসুমীর বার্তায়! এক অডিও বার্তায় মৌসুমী বলেন, ‘আমি মনে করি আমার প্রসঙ্গটা টানার কোনো প্রয়োজন ছিল না। আমি জায়েদকে অনেক ভালোবাসি, তিনি আমাকে যথেষ্ট সম্মান করেন। আমাদের মধ্যে কাজের সম্পর্ক যতদূর সম্ভব খুবই ভালো। তার আমাকে অসম্মান করার প্রশ্নই আসে না। আমি তার মধ্যে এমন কিছু দেখিনি ভালো গুণ ছাড়া, যেটা এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে পারে। তাহলে বলবো, সে খুব ভালো ছেলে। সে আমাকে কখনো অসম্মান করেনি।’ ওমর সানীর অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনিও বলেন, ‘কেন এই প্রশ্নটা বারবার আসছে, সে (জায়েদ খান) আমাকে বিরক্ত করছে, উ”ত্ত্যক্ত করছে!’ বিষয়টি আমার… কেন জানি না এমনটি করলেন। যদিও এটা আমাদের ব্যক্তিগত সমস্যা। আমাদের প্রয়োজন ছিল পারিবারিকভাবে সেই সমস্যার সমাধান করার।”
এক অডিও বার্তায় মৌসুমী তার স্বামী ওমর সানিকে ভাই বলে সম্বোধন করে বলেন, “এখানে জায়েদের কোনো দোষ আছে বলে আমি মনে করি না। আমি আরেকটি কথা বলতে চাই, আমাকে ছোট করার মধ্যে আমাদের… যাকে আমরা অনেক শ্রদ্ধা করে আসছি সেই ওমর সানী ভাই কেন এত আনন্দ পাচ্ছেন-সেটা আমি বুঝতে পারছি না। আমার কোনো সমস্যা থাকলে অবশ্যই আমাকে দিয়ে সমাধান করা হবে, এটাই আমি আশা করি। তিনি (ওমর সানি) আসলে একতরফা বলেছেন। কিন্তু আমি বলেছি কিনা, অভিযোগ করেছি কি না; এটা জানা খুব দরকার ছিল।”
এদিকে মৌসুমীর অডিও বার্তা প্রকাশের পরপরই ওমর সানি ফে’স’/বুক লাইভে এসে আবারও নিজের অভিযোগের পক্ষে অবস্থান নেন। তিনি তার ছেলে ফারদিন ও মেয়ে ফাইজাকে সাক্ষী হতে বলেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি যা বলেছি তা পরিষ্কার করে বলেছি। আমি সম্মানের সঙ্গে কথা বলতে চাই। আমার পরিবারের প্রতি, মৌসুমীর প্রতি আমার অনেক সম্মান আছে। আমার সন্তানদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে। আমি জানি না তিনি ( মৌসুমী) বলেন। সে (মৌসুমী) যা বলেছে, কী ভেবে বলেছে আই ডোন্ট নো। এ বিষয়টি নিয়ে কিছুদিন ধরে একটু দূরত্ব তো চলছিল। আমি তার ব্যাপারে মন্দ কথা, খারাপ কথা কিছুই বলব না। কারণ সে এখনো আমার স্ত্রী। আমার সন্তানের মা। একটা কথা বলতে চাই, আমি কী বলেছি না বলেছি সম্পূর্ণ আমার ছেলে ফারদিন, আমার মেয়ে ফাইজা জানে। আমাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ আছে যে জায়েদ খান মৌসুমীকে বিরক্ত করেছে। ফারদিন ও ফাইজাকে তাদের মায়ের সম্পর্কে বলুক। আমার সন্তানেরা এসব বিষয়ে কথা বলুক। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে। আমি কিছু বলতে চাই না।’
এদিকে চলচ্চিত্র দর্শকদের মতামত যে, ওমর সানি মৌসুমী যে ধরনের কথা বলছেন তাতে করে তাদের দুজনের পরিবারের মাঝে একটা বড় ধরনের অশান্তির বাতাস বইছে। আর এই কারনেই ওমর সানির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন মৌসুমী এবং তাকে ভাই বলে সম্বোধনও করেছেন।