বাংলাদেশের ইকোমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি বেশ কিছুদিন যাবৎ গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের মামলায় জর্জরিত। যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানের প্রধান এতদিন যাবৎ কারাগারে বসবাস করছে। নানান উপায়ে চেষ্টা করলেও যেন কোনোভাবেই গ্রাহকদের টাকা উদ্ধার করা যাচ্ছিল না। তাইতো আদালতকে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানকে।
ইভালি ই-কমার্স কোম্পানিকে নিয়মিত ব্যবসা করতে দেশের দুটি ব্যাংক থেকে ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে বোর্ডকে ২২টি ইভালি গাড়ি ভাড়া বা বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
ইভালির সাবেক চেয়ারম্যান ও সিইও কোথায়, কত টাকা খরচ করেছেন তার তালিকা তৈরি করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশিদ আলম সরকারের হাইকোর্টের একক বেঞ্চ রোববার ইভালি বাতিলের জন্য গঠিত বোর্ডের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ মঞ্জুর করেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি মোরশেদ আহমেদ খান এবং লিখিত আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি সৈয়দ মাহসিব হোসেন।
আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন পরে নিউজবাংলাকে বলেন, “আমরা যখন ইভালির অবসান চেয়ে মামলা করি, তখন আদালত ইভালির সম্পত্তি, টাকা বা যেকোন ধরনের অর্থ বিক্রি বা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।” আদেশের পর মূল্যায়ন সংক্রান্ত সব ব্যাংক বন্ধ রয়েছে।
‘এরই মধ্যে আদালত উচ্ছেদ বা উচ্ছেদ শেষ করার জন্য একটি বোর্ড গঠন করেছে। সব ধরনের লেনদেন বন্ধ থাকায় পরিচালনা পর্ষদ তার নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। এ কারণেই বোর্ড তার নিয়মিত ব্যবসা পরিচালনার জন্য সিটি ব্যাংক এবং সাউথ ইস্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ২ কোটি ৩৫ লাখ ১৭ হাজার টাকা তোলার অনুমতি চেয়েছিল। মামলার শুনানি শেষে মাননীয় আদালত এ আদেশ দেন।
গত বছরের ১৬ অক্টোবর, হাইকোর্ট ইভালি ই-কমার্স কোম্পানি পরিচালনার জন্য সাবেক আপিল বিভাগের বিচারপতি এইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি বোর্ড নিয়োগ করে।
বিচারপতি মানিক ছাড়াও বোর্ডের অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল আহসান, বিশিষ্ট ওএসডি সচিব মাহবুব কবির মিলন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহমেদ এবং ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। কোম্পানির প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী।
বোর্ডের কাজ কী তাও আদেশে বলা হয়েছে। কোম্পানী কোথায় আছে সবই বোর্ড বুঝবে। কোম্পানি যেভাবে চলছে, আগে বোর্ড মিটিং বসবে। এত কিছু করার পর, বোর্ড যদি দেখে যে কোম্পানিটি পরিচালনার যোগ্য নয়, তবে এটি অবসায়নের দিকে এগিয়ে যাবে। আর যদি কার্যকর করা সম্ভব হয়, তাহলে কোম্পানি চলবে।
২২ সেপ্টেম্বর, ইভালির সমাপ্তির অনুরোধ জমা দেওয়া হয়েছিল। ইভাল শেষ করার অনুরোধ রইল যাতে কমিটি বা বোর্ড গঠন করা যায়। গত ১৬ অক্টোবর মামলার শুনানির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
একের পর এক নির্দেশনা তবুও মিলছেনা গ্রাহকের টাকা। সমস্ত প্রকার কার্যক্রমও বোর্ডের আন্ডারে নিলেও উদ্ধার করা যায়নি এখনও গ্রাহকদের বিপুল পরিমাণ টাকা। শেষমেশ কি হবে সেটা এখনও বলা যাচ্ছে না, তবে আদালতের এমন নির্দেশনা হয়তো এবার কিছুটা আশা দেখাতে পারে ভুক্তভোগীদের। এখন দেখার বিষয় শেষমেশ ভুক্তভোগীদের অর্থ ফেরত পাই কিনা।