অনেক জল্পনা-কল্পনার পর অবশেষে রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে নিহত সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুন ওরফে অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর পরিচয় পাওয়া গেছে। তার বাবার নাম সবুজ শেখ ওরফে শাবলুল আলম এবং মা বিউটি খাতুনের দেওয়া ডিএনএ নমুনার সঙ্গে তার ডিএনএ মিলেছে। রোববার (১০ মার্চ) রাতে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ডিআইজি একেএম নাহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়। বৃষ্টি তার বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছে অভিশ্রুতি নামে পরিচিত ছিল। বৃষ্টি ছিল মূলত মুসলিম পরিবারের সন্তান। কিন্তু অভিশ্রুতি হিসেবে তার পরিচয়ের কারণে তার দেহ স্থানান্তর নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। মৃত্যুর পর সনাতন ধর্মাবলম্বী মন্দিরের পুরোহিত ও বাবা-মা বৃষ্টিকে নিজেদের সন্তান বলে দাবি করেন। এরপর ডিএনএ নমুনা নেওয়া হয়। নমুনা পরীক্ষায় বৃষ্টির ডিএনএর সঙ্গে তার বাবা-মায়ের ডিএনএ মিলেছে।
কর্মস্থলে দেওয়া বায়োডাটা অনুযায়ী তিনি সনাতন ধর্মের অনুসারী। বায়োডাটা অনুযায়ী বাবার নাম অভিরূপ শাস্ত্রী এবং মায়ের নাম অপর্ণা শাস্ত্রী। তিনি ইডেন মহিলা কলেজে দর্শন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। ২০১৫ সালে এসএসসি ও ২০১৭ সালে এইচএসসি পাস করেন। বৃষ্টির গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রাম গ্রামের পশ্চিম পাড়ায়।
সিআইডি কর্মকর্তা নাহিদুল ইসলাম বলেন, অভিশ্রুতি ওরফে বৃষ্টি খাতুন, দাবিদার সবুজ শেখ ও বিউটি খাতুনের বাবা-মায়ের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নিহত নারীর দেহ থেকে ডিএনএ নমুনাও নেওয়া হয়েছে। সিআইডি ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে অভিশ্রুতি বা বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ ও মা বিউটি খাতুন।
ডিএনএ রিপোর্টে স্বাক্ষর করে থানায় পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি। লাশ দাবিকারীর বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা জন্য বলা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি ভবনের একটি রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। . ওই আগুনে শিশুসহ ৪৬ জনের মৃত্যু হয়।