সম্প্রতি রেলের টিকিটসহ নানা অব্যবস্থাপনা কেন্দ্র করে কমলাপুল রেলওয়ে অবস্থান নেয় ঢাবি শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়ে নানা মহলে। ঢাবির ওই শিক্ষার্থী দাবি ছয়টি দাবি পূরনের নিয়ে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন। পরে ওই কর্মসূচিতে যোগদেন আরও শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ ১৯ দিন যাবৎ অবস্থান চালিয়ে যান মহিউদ্দিন রনিসহ তার সহযোগিরা। অবশেষে আন্দোলন কর্মসূচী স্থগিত ঘোষনা করল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠকের পর।
বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে টানা ৪ ঘণ্টা বৈঠকের পর আ’ন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন রেলওয়েতে অনিয়ম, দু’র্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে টানা কয়েক সপ্তাহ আ’ন্দোলন চালিয়ে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।
সোমবার (২৫ জুলাই) রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে বাংলাদেশ রেলওয়ে ভবনের পদ্মা হলে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রনি।
তিনি বলেন, রেলওয়ের সচিব ও ডিজির সম্মতিক্রমে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অংশীজন সভায় আমাকে একজন প্রতিনিধিসহ উপস্থিত হয়ে যাবতীয় অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা উত্থাপন এবং আমা’র ৬ দফার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার ফলোআপে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। আমা’র ৬ দফা দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আস্থা রেখে এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মহাপরিচালকের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে দেশের সাধারণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে এবং তৃতীয় কোনো পক্ষ আমাদের আন্দোলনের সুযোগ নিতে না পারে সেজন্য আপাতত আ’ন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করছি।
রনি বলেন, তবে যদি দেখি আমাদের দাবি বাস্তবায়ন হচ্ছে না বা বিলম্বিত হচ্ছে, তাহলে আমি আবারও আন্দোলনে যাব। এই আন্দোলনে দুর্নীতি বিরোধী দেশপ্রেমিক ও সকল সৎ নাগরিকের সমর্থন আশা করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা এবং সহজ ডটকমের যাত্রী হয়রানির প্রতিবাদে এবং ৬ দফা দাবিতে গত ৭ জুলাই থেকে আন্দোলন শুরু করেন।
তার দাবিগুলো হলো-
১.টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সহজ ডট কমের দ্বারা যাত্রীদের হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।হয়’রানির ঘটনায় ত’দন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২. যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে টিকিটের কালোবাজারি রোধ করতে হবে।
৩. অনলাইন-অফলাইন টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সকল সাধারণ মানুষের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
৪. যাত্রীদের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি রেলের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
৫.ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কসহ অন্যান্য দায়িত্বশীলদের কর্মকা’ণ্ড সার্বক্ষণিক মনিটর, শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেল সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে।
৬. ট্রেনে ন্যায্য মূল্যে খাবার বিক্রি করতে হবে, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলনের পর কতৃপক্ষের আশ্বাসে আন্দোলনের স্থগিতের ঘোষনা দিয়েছেন ওই শিক্ষার্থীসহ তার সহযোগিরা। তাদের দাবি বাস্তবায়িত না হলে পূনরায় আবার আন্দোলনের কথাও তিনি জানান।