বর্তমান সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অসংখ্য অভিবাসী রয়েছে। তবে অভিবাসীরা নানা ধরেনর অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। এবং বঞ্চিত হন বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে। সম্প্রতি অবৈধ অভিবাসীদের জন্য যুক্টরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি দিল এক সুসংবাদ। এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত উঠে এলো প্রকাশ্যে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে কাগজপত্রহীন অবৈধ অভিবাসীদের জন্য নতুন আইন চালু হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) পু/লি/শের কাছে মৌখিক বা লিখিতভাবে কোনো অভিযোগ করা যাবে না। এ ধরনের অভিযোগ বা ভ/য়/ভীতি ব্ল্যা/ক/মেইল হিসেবে বিবেচিত হবে। কেউ তা করলে নিউইয়র্ক স্টেট আইন অমান্য ও ক্রা/ই/ম বলে গণ্য হবে। এ সংক্রান্ত একটি আইন গর্ভনর ক্যাথি হোকল গেল সপ্তাহে স্বাক্ষর করেছেন। এ আইনটি স্বাক্ষরকালে গর্ভনর ক্যাথি হোকল বলেন, নিউইয়র্ক ইমিগ্র্যান্টদের কঠিন পরিশ্রম ও মেধার ভিত্তিতেই গড়ে উঠেছে। যারা নিজের ও পরিবারের সুন্দর জীবন গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছেন স্টেট তাদের পাশে রয়েছে। এ আইনটি কাগজ-পত্রহীনদের জন্য রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে। এতে সমাজের ব্যাড অ্যাক্টর খারাপ লোকজন কাগজপত্রহীনদের স্ট্যাটাস নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবে না। এই বিলটি স্টেট সিনেটর আন্না কাপলান ও এসেম্বলি মেম্বার মিশেল সোলাজেস স্পন্সর করেছিলেন। তা স্টেট সিনেটে ৪৮-১৪ এবং এসেম্বলিতে ১০৬-৪১ ভোটে পাশ হয়। গর্ভনর ক্যাথি হোকল আইনটি গত ৯ অক্টোবর স্বাক্ষর করেন।
এটি আইন হিসেবে কার্যকর হবে তার স্বাক্ষরের ৩০ দিন পর। এই ধরনের আইন ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডো, ম্যারিল্যান্ড ও ভার্জিনিয়ায়ও কার্যকর হয়েছে। এদিকে ইমিগ্রেশন পু/লি/শ কর্মস্থল থেকে কাগজপত্রহীন ইমিগ্র্যান্টদের গ্রে/ফ/তা/র করতে পারবে না। বরং কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান যেন ইমিগ্র্যান্ট স্ট্যাটাসের অজুহাতে তাদের প্রতারিত/এক্সপ্লয়েট করতে না পারে সে জন্য কাজ করবে। অনেক কোম্পানি কাগজপত্রহীন কর্মচারীদের তথ্যাদি লেবার ডিপার্টমেন্টে প্রেরণ করে না। ফলে সরকার প্রাপ্য ট্যাক্স থেকে বঞ্চিত হয়। এ ব্যপারে একটি গাইডলাইন তৈরি করার নির্দেশও দিয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন।
ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সেক্রেটারি আলেজান্দ্রা মেয়রকাস ১৩ অক্টোবর ইস্যুকৃত এক মেমোরান্ডামে বলেছেন, কাগজপত্রহীনদের কাজের জায়গায় গণহারে তল্লাশি ও গ্রেফতার করা যাবে না। বরং ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) যেসব এমপ্লয়ার কর্মচারীদের এক্সপ্লয়েট করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জমানায় আইস পুলিশ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ক সাইটে গণহারে রেইড দিয়েছিল। ২০১৮ সালে টেনাসির মিট প্যাকিং প্লান্টে রেইড দিয়ে আইস পুলিশ ১০০ জন কর্মচারীকে গ্রে/ফ/তা/র করে। ২০১৯ সালে মিসিসিপি স্টেটের ফুড প্রসেসিং প্লান্টে রেইড দিয়ে আইস পু/লি/শ ৬০০ জন কাগজপত্রহীন কর্মচারীকে গ্রেফতার করে। এতে তাদের শতশত ছেলেমেয়ে বাবা মা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। আমেরিকাতে অনেক এমপ্লয়ার কাগজপত্রহীন ইমিগ্র্যান্টদের কম বেতনে হায়ার করে। ভবিষ্যতে পু/লি/শি রেইডের ভয় দেখিয়ে তাদের প্র/তা/র/ণাও করে থাকে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সেক্রেটারির মেমোতে বলা হয়েছে, আইস লেবার ডিপার্টমেন্টের সাথে সমন্বয় রেখে খতিয়ে দেখবে চাকুরিদাতারা কর্মচারীদের প্রতারিত করছে কিনা। প্রতারিত শ্রমিকদের নিশ্চয়তা দেয়া হবে তাদের ডিপোর্টেশন বা চাকুরি হারাবার ভয় নেই। বরং মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে কর্মচারী প্র/তা/রা/ণা/র অভিযোগে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পু/লি/শ এ সংক্রান্ত একটি গাইড আগামী ৬০ দিনের মধ্যে তৈরি করবে।
গোটা পৃথিবীর মধ্যে অর্থনৈতিক ভাবে সম্মৃদ্ধাশালী একটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এই দেশটিতে বসবাসের জন্য প্রতিবছরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য মানুষ বৈধ-অবৈধ নানা পন্থায় দেশটিতে পাড়ি জমিয়ে থাকে। এমনকি অনেকেই রয়েছে যারা কিনা কাগজ পত্রের নানা ধরনের জটিলতায় বৈধ উপায়ে দেশটিতে পাড়ি জমিয়ে অবৈধদের তালিকায় সামিল হয়ে থাকে।