অবন্তিকা তার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিক আম্মানের যৌ/ন হয়রানি এবং সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের অপব্যবহার থেকে বাঁচতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) হোস্টেল ছেড়েছিলেন। এরপর আম্মান তার সাথে আরও খারাপ আচরণ শুরু করলে ১৪ মার্চ অবন্তিকা কুমিল্লায় তার বাড়িতে ফিরে যায়। তবে আম্মান-দ্বীন ইসলামের অমানবিকতার কারণে অবশেষে জাবির আইন বিভাগের ছাত্রী অবন্তিকা ফাইরুজ আ/ত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
শনিবার (১৬ মার্চ) কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় দায়ের করা মামলার জবানবন্দিতে এ দাবি করেন অবন্তিকার মা তাহমিনা বেগম। এতে জাবির সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও অবন্তিকার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিক আম্মানকে আসামি করা হয়েছে।
বিবৃতিতে অবন্তিকার মা উল্লেখ করেন, ‘ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা (২৪) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনে স্নাতকোত্তর পড়ছিলেন। আমার মেয়ে মেধা তালিকা অনুযায়ী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে সিট পেয়েছে। অবন্তিকা আমাকে জানায়, তার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিক আম্মান তাকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে এবং বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে জানানোর পরও তিনি আম্মানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি, বরং সে আমার মেয়েকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে।তাই আমার মেয়ে হোস্টেলে থাকা নিরাপদ না ভেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে মেয়েদের মেসে থাকতে শুরু করে।
কিন্তু থেমে থাকেনি দুই অভিযুক্ত। তারা তার কিছু সহপাঠীর মাধ্যমে অবন্তিকার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ শুরু করে। তাদের মাধ্যমে আমার মেয়েকেও নানাভাবে লাঞ্ছিত করতে থাকে। এদিকে, অবন্তিকা ১৪ মার্চ কুমিল্লার বাড়িতে চলে যায়। অন্যমনস্ক অবন্তিকা আমাকে বলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল ছেড়ে মেসে যাওয়ার কারণে সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে। অর্থাৎ আসামি রায়হান সিদ্দিক আম্মান আমার মেয়েকে আগের চেয়ে বেশি যৌ/ন হয়রানি করছে।
তাহমিনা বেগম দাবি করেন, সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম আম্মনের হয়ে আমার মেয়েকে ৬ থেকে ৭ বার অফিসে ডেকে তার অপদস্থ করেন। মেয়ে কুমিল্লা চলে গেলেও খারাপ মেয়ে বলে প্রচার করা হবে, যেন আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। এসব কারণে আমার মেয়ে কুমিল্লা শহরের বাঙ্গিচাগাও বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন জানান, নিহত অবন্তিকারের মা তাহমিনা বেগম বাদী হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী রায়হান সিদ্দিক আম্মানের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।