সরকারি আদেশ অমান্য করে সরকারি কর্মকর্তাদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ বন্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। গত রোববার (৩১ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সৈয়দুল হক সুমন এ রিট দায়ের করেন। নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনের শুনানি মঞ্জুর করেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন হাইকোর্টকে বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধে জারি করা প্রজ্ঞাপন কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে। এ কারণে ওই আদেশ অমান্য করে সরকারি কর্মকর্তাদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ বন্ধে ব্যারিস্টার সুমনের করা রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার (১ আগস্ট) বিচারপতি আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সৈয়দুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, কোনো সরকারি কর্মকর্তা প্রয়োজন ছাড়া বিদেশে যাবেন না। তিনি আরও বলেন, কৃষিমন্ত্রীর পিএস নেদারল্যান্ডসের কৃষি মেলায় গিয়েছিলেন।
এর আগে রোববার (৩১ জুলাই) সরকারি কর্মকর্তাদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ বন্ধে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। জনস্বার্থে তিনি এই রিট দায়ের করেন। নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনের শুনানি মঞ্জুর করেন বিচারপতি এ সময় ব্যারিস্টার সুমন আদালতকে বলেন, একজন মন্ত্রীর পিএস সরকারি প্রজ্ঞাপন অমান্য করে বিদেশে গেছেন। এভাবে সরকারি প্রজ্ঞাপন অমান্য করে অনেক কর্মকর্তা বিদেশে চলে যাচ্ছেন। পরে আদালত রিট আবেদনের অনুমতি দেন। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, দুদকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে। এর আগে গত ১২ মে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ করে সার্কুলার জারি করে সরকার। সার্কুলার অনুযায়ী, করোনা-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এক্সপোজার ভিজিট, শিক্ষা সফর, এপিএ এবং উদ্ভাবন-মুক্ত ভ্রমণ এবং কর্মশালা বা সেমিনারে অংশগ্রহণ সহ সব ধরনের বিদেশ ভ্রমণ স্থগিত থাকবে। বর্তমান বিশ্ব সংকট। এই আদেশ উন্নয়ন বাজেট এবং ব্যবস্থাপনা বাজেট উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, গত ১১ মে সরকারি এক সভা শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অনলাইনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর প্রসঙ্গে বলেন, এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এখন থেকে আর বিদেশ সফর নয়। কর্মকর্তাদের যদি বিশেষ কারণে বিদেশ সফরে যেতে হয়, তবে যাবেন, অন্যথায় যাবেন না। সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর সীমিত করা হচ্ছে।