সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে এক গর্ভবতী স্কুল শিক্ষিকাকে নৃশংসভাবে প্রাণনাশ করা হয় এমন ঘটনায় সারা দেশে আলোচনা ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের উদ্যোগে ঘটনার সমাধান মিলল। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাণনাশের ঘটনায় রবিবার দ্বাদশ শ্রেণির এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দীর্ঘ এক মাস পর ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় নৃশংস প্রাণনাশের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ১ জুন রাজ্যে এক গর্ভবতী স্কুল শিক্ষিকাকে নৃশংসভাবে প্রাণনাশ করা হয়েছিল৷ এই ঘটনায় পুলিশ ১৭ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে৷ প্রেমের জের ধরে স্কুল শিক্ষিকার প্রাণনাশ করেছে অভিযুক্ত কিশোর। রোববার (৩ জুলাই) রাতে টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, স্কুল শিক্ষককে প্রাণনাশের অভিযোগে গত রবিবার দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই স্কুল শিক্ষকের সঙ্গে ওই কিশোরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ফলে ওই শিক্ষিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। ৩৫ বছর বয়সী ওই শিক্ষিকা ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
অযোধ্যা পুলিশের ডিআইজি এপি সিং বলেছেন, দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রকে তার শিক্ষককে প্রাণনাশের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এবং পোশাক পরা দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়। ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত কিশোরের স্কুল শিক্ষকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও ছিল। ৩৫ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষক ও কিশোর একই এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই কিশোরের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করতে রাজি হননি স্কুল শিক্ষিকা। পুলিশের বক্তব্যও অনেকটা একই। মৃতের নাম সুপ্রিয়া ভার্মা। স্বামী ও মায়ের সঙ্গে অযোধ্যার ওই এলাকায় থাকতেন তিনি। তার স্বামী উমেশ ভার্মাও একজন সরকারি শিক্ষক।
ডিআইজি এপি সিং বলেন, গ্রেপ্তার করা কিশোরের সঙ্গে ওই শিক্ষিকার পরকীয়া ছিল। কিন্তু ওই কিশোর সম্পর্ক শেষ করে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু ওই শিক্ষিকা সব সময় তাকে জোর করতেন এবং সবার সামনে তাকে অপমান করার হুমকি দিতেন। সে কারণেই ওই কিশোর প্রাণনাশের পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়। অযোধ্যার এসএসপি শৈলেশ পান্ডে বলেছেন, অভিযুক্ত কিশোর তার পরিবার এবং বিরোধিতার ভয়ে শিক্ষকের সাথে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিল, কিন্তু মহিলাটি সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার জন্য জোর দিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, কিশোর ঘরে ঢুকে শিক্ষিকাকে ধারালো ছুরি দিয়ে কু// পিয়ে প্রাণনাশ করে। একটি আলমারি ভেঙ্গে স্কুল শিক্ষকের বাড়ি থেকে নগদ ৫০,০০০ টাকা এবং কিছু মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে প্রাণনাশের ঘটনাকে ডাকাতি বা লুটপাটে পরিণত করতে।
উল্লেখ্য, গত ১ জুন অযোধ্যার কোতোয়ালি থানা এলাকার শ্রীরামপুরম কলোনিতে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক সরকারি স্কুলের শিক্ষিকাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কু// পিয়ে প্রাণনাশ করা হয়। প্রাণনাশের সময় ওই নারী বাড়িতে একা ছিলেন। প্রাণনাশের পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।