একজন চিকিৎসক হলেন সবথেকে সভ্য ও সুআচরণবিধির প্রতীক। তাদের কাছ থেকে সাধারণ মানুষের শেখার অনেক কিছু আছে। সমাজের সবথেকে উচ্চ পর্যায়ের পেশায় তারা নিয়োজিত। কিন্তু চিকিৎসকরা তাদের সেই মহামূল্যবান আদর্শের কথা ভুলে গিয়ে যদি অশিক্ষতদের মত কান্ড ঘটায় তাহলে রোগীরা কোথায় গিয়ে সঠিক সেবা পাবে এমনটাই ধারণা করছেন সাধাঁ মানুষ। সম্প্রতি জানা গিয়েছে অপারেশন থিয়েটারেই দুই চিকিৎসক শুরু করে দিল মারামারি।
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে দুই চিকিৎসকের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রায় দুই ঘণ্টা অপারেশন থিয়েটার বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন সেবাগ্রহীতারা। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় জেনারেল সার্জারি ও গাইনি ও প্রসূতি অপারেশন থিয়েটারে এ ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী জানান- একই হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট নাহিদুল কাদির অ্যানেস্থেটিস্ট ও জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. অপারেশন থিয়েটারে শামসুর রাহমানের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়। এদিকে তাইজুল ইসলামকে ডাকা হলে তার সঙ্গে তর্কাতর্কি হয় অধ্যাপক নাহিদুল কাদিররেরে। এক পর্যায়ে ডাঃ তাইজুল ইসলাম অপারেশন থিয়েটারের ভিতরে শামসুর রহমানকে শার্টের কলার ধরে ঘুষি মারতে থাকেন।
গ্রহীতা (অপারেশন থিয়েটার থেকে ফিরে আসা রোগী) ঝর্ণা বেগমের স্বামী বাবুল হোসেন বলেন, সকাল ৯টার দিকে আমি আমার স্ত্রীকে অপারেশনের জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসি। এরপর ঝর্ণাকে অপারেশন থিয়েটারের পাশের ঘরে রাখা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করেই অপারেশন থিয়েটারের ভেতরে হৈচৈ শুরু হয়। সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার লোকজন অপারেশন থিয়েটারের খাঁচা গেট লাগিয়ে দেন। দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর খুলে দেওয়া হয় অপারেশন থিয়েটার। এসব জটিলতার কারণে চিকিৎসকরা ঝর্ণার অপারেশন করেননি।
এ বিষয়ে জানতে ড. তাজুল ইসলাম ও নাহিদুল কাদিরের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কেউ কথা বলতে রাজি হননি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মো. মাহফুজুর রহমান সোহান বলেন, অপারেশন থিয়েটারের ভেতরে দুই চিকিৎসকের মধ্যে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়। তবে বিষয়টির সমাধান হয়েছে। এখন অপারেশন থিয়েটার চালু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চিকিৎসকরা অপরেশন থিয়েটারে এমন ঘৃণিত গতনা ঘটাবে সেটা কেউ ভাবতেও পারেনি। চিকিৎসকরা অনেক শ্রদ্ধা ও সম্মানের পাত্র তবে এই ধরণের মানহানিকর কর্ম কান্ড তাদের সম্মানের উপর অনেক বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। অপরাশেন থিয়াটারে মারামারি করাটা কখনই চিকিৎসকদের মানায় না। এই ধরেণের কান্ড ঘটিয়ে তারা সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়ামূলক মনোভব সৃষ্টি করেছে।