নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা কোনো অপরাধ করিনি। আশা করছি, আদালতের রায়ে সত্য প্রমাণিত হবে।
রোববার রাতে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আজ এ মামলায় ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন আদালত। রাত ৮টা ২০ মিনিটে ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা এ দিন ধার্য করেন।
রোববার আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও অ্যাডভোকেট মো. হায়দার আলী।
শুনানিতে ড. ইউনূসসহ আসামিদের খালাসের আবেদন করেন তার আইনজীবী অন্যদিকে ইউনূসসহ আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও হায়দার আলী।
তার আগে বেলা ১১টা ১৮ মিনিটে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার আইনজীবীসহ আদালতে হাজির হন। বেলা ১১টা ৩৩ মিনিটে ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানার আদালতে যুক্তিতর্ক শুরু হয়। মাগরিবের পর দুই বিরতি দিয়ে তর্ক চলতে থাকে।
গত ২১ ডিসেম্বর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে মামলার আইনি দিক নিয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। এদিন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন অসমাপ্ত রেখে পরবর্তী শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য করা হয়েছে।
ওই দিন এ মামলার সাক্ষীদের বর্ণনায় ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন ড. ইউনূস বা অন্য কেউ জড়িত থাকার কোনো ইঙ্গিত নেই। তাদের বিরুদ্ধে কোনো দলিল নেই। মামলার আর্জিতে কোথাও আসামিদের দোষী বলে অভিযোগ নেই। কোম্পানি আইন অনুযায়ী অপরাধ হবে কোম্পানির। কিন্তু এখানে ওই ব্যক্তিকে দোষারোপ করা হয়েছে। এ কারণে এ মামলা চলতে পারে না।
এ মামলায় গত ৬ ডিসেম্বর ইউনূসকে শ্রম আদালতে (গতকাল পর্যন্ত) ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত। ওই দিন ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস সপ্তমবারের মতো শ্রম আদালতে হাজির হন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে বাদী হয়েছিলেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান। ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় শ্রম আইনের ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় শ্রম কল্যাণ ফাউন্ডেশনে সুনির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের স্থায়ী চাকরি না করা, সরকারি ছুটির টাকা নগদ না করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ ঘটনায় ড. ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নূরজাহান বেগম ও মোঃ শাহজাহানকে বিবাদী করা হয়েছে।