টাঙ্গাইলে বাসা ছেড়ে দেওয়ার জন্য ১০ মাসের অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করাসহ একজন কলেজছাত্রীকে জিম্মি করে রেখেছেন কামরুল হাসান নামের একজন বাড়িওয়ালা। এ ঘটনার পর ঐ ছাত্রী কোনো উপায় না পেয়ে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করেন। খবর পাওয়ার পর সেখানে গিয়ে হাজির হন পুলিশ সদস্যরা এবং ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে।
গতকাল (সোমবার) অর্থাৎ ১৩ ডিসেম্বর বিকেলের দিকে টাঙ্গাইল পৌরসভা এলাকার বেতকার মুন্সিপাড়া নামক স্থানে এই ঘটনা ঘটেছে। সেখানে কামরুল হাসান ঠান্ডু নামের ঐ বাড়িওয়ালা ১০ মাসের বাড়ি ভাড়া দেওয়া লাগবে এমন দাবি করে মেয়েটিকে বাড়িতে জিম্মি করে রাখে। জিম্মি করে রাখা ঐ ছাত্রী সরকারি কুমুদিনী কলেজে অনার্সে পড়াশুনা করেন।
স্থানীয়রা জানায়, পৌরসভার বেতকা মুন্সিপাড়ার কামরুল হাসান ঠান্ডুর বাসায় চার মাস আগে বাসা ভাড়া নেন ওই শিক্ষার্থী। চলতি মাসের ভাড়া পরিশোধ করে বাসা ছেড়ে দেওয়ার কথা বাড়িওয়ালাকে জানান ছাত্রী। কিন্তু এক মাসের ভাড়া অতিরিক্ত দিলেও বাড়িওয়ালা আগামী ১০ মাসের ভাড়া চেয়ে ছাত্রীকে জিম্মি করে রাখেন। ওই ছাত্রী বাসা ছেড়ে দিতে চাইলে তাকে হুম’কি ও অশ্লী’ল ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেন ছাত্রী। এরপর টাঙ্গাইল সদর থানার এএসআই আয়নুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রীকে উদ্ধার করে।
এর আগে বাড়িওয়ালার আত্মীয় জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে পুুলিশের উপস্থিতিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের ওপর হামলার চেষ্টা চালানো হয়। এ ছাড়া সাংবাদিকদের ছবি ও ভিডিও করতে বাধা দেওয়া হয়। ওই কলেজছাত্রী বলেন, চলতি মাসের ভাড়া পরিশোধ করে বাসা ছাড়তে চাইলে বাড়িওয়ালা আরও ১০ মাসের ভাড়া দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমাকে জিম্মি করে রাখেন। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাড়িওয়ালা কামরুল হাসান ঠান্ডু বলেন, ‘বাসা ছেড়ে দিলে আগামী ১০ মাসের ভাড়া বাড়তি দিতে হবে। না হলে নতুন ভাড়াটিয়া খুঁজতে দেরি হবে। আইন-টাইন বুঝি না, আমাকে বাড়তি টাকা দিয়ে ওই ছাত্রীকে বাসা ছাড়তে হবে।’
আইনুল ইসলাম যিনি টাঙ্গাইল সদর থানার এএসআই হিসেবে রয়েছেন তিনি জানান, ৯৯৯ নম্বরে কল পাওয়ার পর সেখানে গিয়ে আমাদের একটি টিম হাজির হয়ে ঐ ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। তবে বাড়ির মালিক ঐ মেয়েটির সাথে অশোভন এবং ক্ষিপ্র আচরণ করেছেন। ছাত্রীকে জিম্মি করার মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে আমরা ঐ ছাত্রীকে সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি।
বর্তমান সময়ে গনমাধ্যমে এই ধরনের সংবাদ প্রায় আসতে দেখা যায় কিন্তু এই ধরনের বিষয় নিয়ে বাড়িওয়ালার সাথে বচসা প্রায় চলতে থাকে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে। সেটা কোথাও কোথাও প্রকট হতে দেখা যায়।