আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার লক্ষে রাজনৈতিক দলগুলো ও বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরা পরামর্শ দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। বিগত দুটি নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক রযেছে নানা মহলে। যার কারনে আগামী নির্বাচনের বিষয়ে অনেকেই সরব হচ্ছেন। দেশের গণতান্ত্রীক ধারা বজায় রাখতে সুষ্ঠু নির্বাচন গুরুত্বপূর্ন বলে ব্যক্ত করেছেন বিদেশী কূটনৈতিকরা। বিদেশী কূটনৈতিকদের পরামর্শ দেওয়া নিয়ে যা বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
বাংলাদেশ বাইরে থেকে কোনো পরামর্শ চায় না উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এমন একটি জাতি যারা গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে রক্ত দিয়েছে। আমি বলব- অন্যদের কথা ব/লার আগে আয়নায় তা/দের (বিদেশী সমালোচকদের) নিজেদের মু/খ দেখতে হবে। আমরা এত উপদেশ চাই না।’
শনিবার সিলেট সদর উপজেলার সাহেবের বাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ‘স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য’ নির্বাচনের মাধ্যমে বারবার ক্ষমতায় এসেছে। “আমরা খু/ব স্বচ্ছ থাকি।”
কোনো দেশের নাম না করে তিনি বলেন, জাতি যখন স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিল, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছিল এবং জনগণের কণ্ঠস্বর অস্বীকার করেছিল তখন যারা মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নিয়ে বক্তৃতা দিয়েছিলেন তাদের অনেকেই বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন না।
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ যখন ভালো অবস্থানের দিকে যাচ্ছে এবং অর্থনৈতিক ফ্রন্টে ভালো করছে, তখন আধিপত্য দেখানোর প্রবণতা বেড়েছে।
তিনি বলেন, সরকার কখনই বিচারবহির্ভূত হ/ত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হয় না এবং কাউকে নিখোঁজ দেখতে চায় না, তবে দুর্ঘটনা প্রতিটি দেশেই ঘটে। প্রতিনিয়ত, যখন কোন ঘটনা ঘটে, আমাদের মিডিয়া তা নিয়ে কথা বলতে শুরু করে। এটা ঠিক না। বিদেশে বিচারবহির্ভূত হ/ত্যাকাণ্ডের সংখ্যা অনেক। আমাদের মিডিয়া এটা নিয়ে কাজ করে না। বিদেশীদের কাছে যায় নিজেদের সমস্যা জানাতে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার চায় না দেশে কোনো ব্যক্তি নি/হত হোক, গু/ম হোক। খু/ন-গু/ম সব দেশেই হয়, সরকার এর জন্য দায়ী নয়। বরং যারা খু/ন-গু/ম করে তাদের শাস্তি দিতে সরকার সবসময় চেষ্টা করে।
এ সময় তিনি বলেন, সিলেটের মানুষ বিদেশমুখী। শিক্ষায় সিলেট অনেক পিছিয়ে। আমাদের সেদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। পড়াশোনা করে বিদেশে গেলে আমাদের অর্থনীতির উন্নতি হবে। তাই আমাদের সবার উচিত শিক্ষা খাতে মনোযোগ দেওয়া।
মোমেন আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই শিক্ষাখাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের সরকার। নিরক্ষরমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে হলে প্রয়োজন সুশিক্ষিত নাগরিক। বর্তমান সরকার সুশিক্ষিত নাগরিক তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা খাতে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে। এ ছাড়া স্কুল, কলেজ, কারিগরি ও মাদ্রাসায় বিভিন্ন ধরনের নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে দেশের যে অগ্রগতি হয়েছে তা প্রমাণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সাহেবেরবাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশফাক আহমদ, সিলেট সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: নিজাম উদ্দিন।
প্রসঙ্গত, সরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, দেশের আভ্যন্তরীন বিষয়ে কারর পরামর্শ সরকারে প্রয়োজন নেই।