Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / অন্তর্বর্তী সরকারের ‘সব কাজ বৈধ’, মেয়াদ অনির্দিষ্ট: অধ্যাদেশ হচ্ছে

অন্তর্বর্তী সরকারের ‘সব কাজ বৈধ’, মেয়াদ অনির্দিষ্ট: অধ্যাদেশ হচ্ছে

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যেখানে সরকারের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়নি। খসড়ায় বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ গঠিত না হওয়া এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় বহাল থাকবে।

খসড়ায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, এই সরকারের কোনো কার্যক্রমের বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টসহ কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। এমনকি একে অবৈধ ঘোষণা করাও নিষিদ্ধ থাকবে, এবং এ সংক্রান্ত কোনো মামলা বা আইনি প্রক্রিয়াও পরিচালনা করা যাবে না।

‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’ নামে পরিচিত এই খসড়া অধ্যাদেশ গত ১৯ সেপ্টেম্বর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে। এটি গেজেট আকারে প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ শুক্রবার জানান, এই অন্তর্বর্তী সরকার পরবর্তী নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা গ্রহণের আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে। তিনি আরও বলেন, অধ্যাদেশের খসড়াটি যথাযথ বিবেচনায় প্রস্তুত করা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা বর্তমানে দেশের বাইরে আছেন, দেশে ফিরে এসে তিনি অধ্যাদেশ চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ অগাস্ট ছাত্র আন্দোলনের পর ভারতে যান। তার অনুপস্থিতিতে ৮ অগাস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয় এবং সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়।

এই সরকারের মেয়াদ সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। সংবিধান অনুসারে সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়া আবশ্যক। বিশেষ পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের সুযোগ রয়েছে। বিএনপি প্রথমে অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দেওয়ার পক্ষে থাকলেও এখন তারা দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানাচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম বৈধতা নিয়ে খসড়ায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, তাদের সব সিদ্ধান্ত আইনসম্মত গণ্য হবে এবং এর কোনো বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও কার্যধারা সম্পর্কে খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, সরকারে কোনো ত্রুটি থাকলেও তা কার্যক্রমের বৈধতা ক্ষুণ্ন করবে না। এছাড়া, সরকার নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ এবং নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে পারবে। প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টারা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র প্রদান করে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিতে পারবেন।

এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের যোগ্যতা নির্ধারণে নাগরিকত্ব, বয়স, এবং বিচারিক মানদণ্ডের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। ত্রয়োদশ সংসদ গঠিত হওয়া এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার সরকারি কর্মচারীদের সহায়তায় বৈধভাবে দায়িত্ব পালন করবে।

উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পতনের পর প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়। পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ১৯৯৬, ২০০১, এবং ২০০৮ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসাংবিধানিক ঘোষণা করে বিলুপ্ত করা হয়।

About Nasimul Islam

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *