কর্ম সন্ধানে দেশ ছেড়ে অনেকে প্রবাসী জীবন যাপন করেন। তবে অনেকেই দেশে মাটি আর চোখে দেখতে পারে না। তার মধ্যে তাসনিম শকফলাও একজন। নিউ জার্সিতে তার মেয়ের জন্মদিনের রাতে স্বামীর হাতে খু/ ন হওয়া সন্তানের মা সায়মা তাসনিম শাফলার (২৩) এর মরদেহ দেশে এসেছে। সে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের হাজরাই গ্রামের মৃত মখদ্দুছ আলীর একমাত্র মেয়ে। সোমবার বিকেলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তার মরদেহ দেশে পৌঁছায় এবং সন্ধ্যায় জানাযার নামাজের পর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। নিহতের জানাজায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সায়মা তাসনিম শাফলারের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। তার স্বজনদের কান্নায় চারপাশ ভারি। একমাত্র সন্তানকে চিরতরে হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বারবার অজ্ঞান হয়ে পড়েন শাফলার মা জাহানারা বেগম।
নিহতের মা জাহানারা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, গত ৪ জুন শনিবার শাপলার একমাত্র মেয়ে শাহিদা বেগম ফারিহার (৫) জন্মদিনের রাতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তার ধর্মদ্রোহী স্বামী আবদাল হোসেন শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পুলিশ ঘাতক আবদালকে গ্রেপ্তার করে এবং সে হত্যার কথা স্বীকার করে।আব্দাল শাফলার ওই দিন ফারিহার জন্মদিন পালন করতে তার নিউ জার্সির বাড়িতে গিয়েছিলেন।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, “মেয়ে শাফলার আমাদের প্রতিবেশী সমুজ আলীর ছেলে আবদাল হোসেনের সঙ্গে ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি বিয়ে করেন। ২০১৬ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। কিন্তু বিয়ের পর আবদালের মা মিনারা বেগম ও বড় ভাই। আক্তার ভাই আমার মেয়েকে মেনে নিতে পারেনি।তারা আমার মেয়েকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নানাভাবে নির্যাতন করে।একই গ্রামের আনজাব আলীর ছেলে সুজন তাদের বাংলাদেশ থেকে জ্বালানি সরবরাহ করত। খু/ নের কয়েকদিন আগে আবদাল মারধর করে। শাপলা একসময় আমার মেয়ে নিউ জার্সিতে একা থাকত তার মেয়েকে নিয়ে তার কষ্টে। আবদাল তার বাবা-মায়ের সাথে মিশিগানে থাকত।আব্দাল আমার মেয়ের কাছ থেকে সব টাকা ছিনিয়ে নেয়।আমি যখন ফোনে কথা বলতাম তখন শাপলা কান্নাকাটি করে আমাকে বলত। পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে পড়েছে আবদাল। মেয়েদের সাথে তোলা বিভিন্ন ভিডিও দেখিয়ে শাপলাকে ফোন থেকে ডিলিট করে দিত আবদাল। এ অপরাধীর শাস্তির জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্র সরকার,বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানান। তার মেয়ের হ/ ত্যাকাণ্ড এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত ওই স্বামী এখন যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হেফাজতে আছে। তবে তাকে দেশ ফেরানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ। অন্যদিকে মেয়েকে হারিয়ে তার পরিবারে সকলেই ভেঙ্গে পড়েছেন। অনেক এলাকাবাসি তার লাশ বাড়ি আনার জন্য বিমান বন্দরে ভিড় জমায়। নিথরদেহকে সনাক্ত করে পুলিশ ভেরিফিকেসনের পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।