নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষে রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের সাথে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশিন। এতে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করে রাজনৈতিক দলগুলো। তবে বেশির ভাগই দল ইভিএমের বিপক্ষে মত দেন। কিন্তু এসব মতামতের মল্যায়ন না করেই ১৫০ আসনে ইভিএমে সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন এমন বিতর্ক উঠেছে।আপনারা কি চান ব্যালটে ভোটের মাধ্যমে সেই সেহরি, ইফতারি খাক মন্তব্য করে যা বললেন ইসি মো. আলমগীর।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, আপনারাই তো বলেন যে, রাতে ভোট হয়, সকালে ভোট হয়, দুপুরে ভোট হয়, সেহরি খায়, ইফতারি খায়। আপনারা কি চান আবারো ব্যালটে ভোটের মাধ্যমে সেই সেহরি, ইফতারি খাক?
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিষয়ে যে মতামত দেওয়া হয়েছে, তা রোডম্যাপে সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি, এমনকী গণমাধ্যমে এ ধরনের প্রতিবেদনেরও ব্যাখ্যা দেন সাবেক ইসি সচিব।
মো. আলমগীর বলেন, দলগুলোর সঙ্গে যে সভা করেছি, তা আপনারা সরাসরি দেখেছেন। আমাদের কর্মকর্তারা এগুলো লিপিবদ্ধ করেছেন, ভিডিও ক্লিপ আছে। সেগুলো দেখে আমাদের লিখিতভাবে দিয়েছেন। তিনবার মিলিয়ে দেখা হয়েছে। আমরা দলগুলোর লিখিত বক্তব্য এবং ভিডিও ক্লিপের ভিত্তিতে ইভিএম নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, অনেকেই বলেছেন পেপার ট্রেইল রাখতে, পরে আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তারা আমাদের বলেছে এই মুহূর্তে যোগ করা সম্ভব নয়। তাই এটা আমরা কিন্তু ইভিএমের বিপক্ষে সংশ্লিষ্ট দলের মতামত হিসেবে ধরে নিয়েছি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ভোটার তালিকার সঙ্গে ইভিএমে ছবি দেখা যায়। তাই একজনের আঙুলের ছাপ না মিললেও একজনের ভোট অন্যজন দেওয়ার সুযোগ নেই। কারো আঙ্গুলের ছাপ না মিললে সেই ফটো মিলিয়ে দেখা হয়।
আমরা সব দিক থেকে নিশ্চিত যে ইভিএমে কারচুপি করা যাবে না। আর অনেকেই বলেছেন যদি কারচুপি করা না যায়, তবেই ইভিএম চায় তারা। তাই আমরা দেখেছি মোট ১৭টি দল ইভিএম চায়।
মো: আলমগীর বলেন, যেখানে ইভিএম হয়েছে, সেখানে কোনো মারামারি হয়নি, কোনো রক্তপাত হয়নি, কোনো কারচুপি হয়নি, এমনকি একটি নির্বাচন নিয়ে কোনো অভিযোগ বা চ্যালেঞ্জ নেই। তাই সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা ইভিএমের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা আমাদের সিদ্ধান্ত- ১৫০ আসনে যদি নির্বিঘ্নে ভোট নিতে পারি, বাকি ১৫০ আসনে ব্যালটে হলে যেন প্রয়োজনীয় ফোর্স মোতায়েন করতে পারি, সেভাবেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আপনারা টাকা দিলে আমরা ৩০০ আসনে ইভিএম করব। এএছাড়া প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা যদি করতে পারেন, আমরা ৩০০ আসনেই করব। যেহেতু পত্রিকায় এসেছে, আমরা দেখব আমাদের কোনো ভুল ত্রুটি আছে কিনা। যদি ভুল থাকে আমরা সংশোধন করব। ১৭০ জিবি রেকর্ড আছে আমাদের কাছে। অনেকেই লিখে নিয়ে এসেছেন বিপক্ষে, কিন্তু আলোচনা পর মাইন্ড চেঞ্জ করেছেন, আমরা তাদের পক্ষে রেখেছি।
ইভিএম নিয়ে নতুন প্রকল্প নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আগামীকাল (১৯ সেপ্টেম্বর) আমরা বসব। আমাদের পর্যবেক্ষণ সঠিক বলে প্রমাণিত হলে ইভিএমের নতুন প্রকল্প অনুমোদন করা হবে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন ইভিএমে থাকতে চায় এমনটি উঠে আসে নির্বাচন কমিশনার মোঃ আলমগীরের বক্তব্যে। তবে তিনি ইভিএম নিয়ে বিভিন্ন উদাহরন তুলে ধরেছেন।