কোরবানীর ঈদ কে সামনে রেখে প্রতি বছর অসংখ্য পশু বাইরের দেশ থেকে দেশে আনা হয়। তবে বেশিভাগ পশু নিয়ম ছাড়াই দেশে আনা হয় বলে অভিযোগ উঠে আসে। এদিকে, দেশের বিভিন্ন সিমান্ত এলাকা থেকে প্রতি বছর অসংখ্য পশু জব্দ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এই সকল পশু জব্দ করার পর তা কি করা হয় এমন প্রশ্ন অনেকের মনে দেখা দেয়। তবে এবার অভিযোগ উঠে এসেছে যে সিমান্ত এলাকা থেকে কয়েকটি গরু জব্দ করা হলেও তা মাত্র কয়েক হাজার টাকায় বিক্রয় করে দেওয়া হয়েছে। এবার এই বিষয়ে বিস্তারিত সংবাদ প্রকাশ্যে এলো।
টাকার বিনিমিয়ে চো’রা’ই’প’থে আনা ১০টি ব্রাহামা বিদেশি গরু বিক্রি করে দিয়েছেন কক্সবাজারের টেকনাফ সার্কেলের শুল্ক কর্মকর্তা মো. আবদুর নূর।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জুন আবু ছৈয়দ নামের এক ব্যক্তির ট্রলার থেকে থাইল্যান্ড থেকে চো’রা’ই’প’থে আমদানি করা বিশাল আকারের ১০টি ব্রাহামা গরু জব্দ করে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সদস্যরা। পরে বিজিবির শাহাপরীর দ্বীপ বিওপির প্রতিনিধি জব্দ করা গরু ১০টি গরু টেকনাফ স্থলবন্দরের কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে।
জানা যায়, কোরবানি সামনে রেখে চোরাইপথে থাইল্যান্ড থেকে গরু ১০টি আমদানি করেন ঢাকার আহম্মদ শামসুদ্দিন নামের এক চো’রা’কা’র’বা’রি।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত ২৬ জুন জব্দ করা এসব গরু কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে একই দিন নিলাম দেখিয়ে মাত্র ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে গরুগুলো অভিযুক্ত আহম্মদ শামসুদ্দিনের কাছে বিক্রি করে দেন শুল্ক কর্মকর্তা মো. আবদুর নূর। এ সংক্রান্ত একটি রশিদ এসেছে।
অভিযোগ উঠেছে, মোটা অংকের অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এসব গরু বিক্রি করা হয়েছে।
গরু ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত প্রজাতির গরু ব্রাহামা। মাংস উৎপাদনের জন্য এই গরুর ব্যাপক সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশেও এসব গরুর চাহিদা রয়েছে। তাই একেকটি গরু ১৫ লাখ থেকে ৪০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। মাত্র ৫০০ টাকা করে গরু বিক্রিতে তারাও বিস্মিত।
অভিযোগের বিষয়ে টেকনাফ সার্কেলের শুল্ক কর্মকর্তা মো. আবদুর নূরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বললে বিপদে পড়তে হয় উল্লেখ করে অফিসে যেতে বলে ফোনের লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন। অভিযোগ উল্লেখ তার ব্যবহৃত মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।
এ বিষয় জানতে কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট, কক্সবাজার বিভাগীয় কর্মকর্তার সরকারি ল্যান্ডফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন কেউ রিসিভ করেননি।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে কক্সবাজার সার্কেলের কর্মকর্তা মো. মহসিনের সহযোগিতা চাওয়া হলে তিনি বলেন, স্যারের সঙ্গে এ বিষয়ে আমি কথা বলেছি, স্যার টেকনাফ অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন। তার পরামর্শ মতে টেকনাফ সার্কেলের শুল্ক কর্মকর্তা আবদূর নূরের সঙ্গে আমি কথা বলি, তিনি তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে গরুপ্রতি ভ্যাটের ৫০০ টাকা তুলতে তিনি গরুগুলো বিক্রি করেছেন বলে আমাকে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এই গরু দেশে চাহিদা থাকলেও তা দেশে আমদানি করা নিষিদ্ধ রয়েছে। তবে এরপরও কিছু মানুষ নানা রকম অনিয়ম করে দেশে এই গরু নিয়ে আসে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই সকল অনিয়ম কারিদের গ্রেফতার করতে না পারলেও প্রায় সময় গরু জব্দ করেন। তবে বেশিভাগ সময় অনিয়মকারীরা পালিয়ে যায়। তবে গরু জব্দ করা হলেও তা কি করা হয় তা নিয়ে প্রায় সময় অনেকের মনে নানা রকম প্রশ্ন দেখা দেয়।