মুমিনুল হকের সরে দাঁড়ানোর পর বাংলাদেশের টেস্ট দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হয়েছেন সাকিব আল হাসান। সাকিবের অধিনায়কত্বে ১৬ জুন অ্যান্টিগায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে তৃতীয়বারের মতো উইন্ডিজের বিপক্ষে শুরু হচ্ছে সাকিবের অধিনায়কত্ব।
এর আগে ২০০৯ সালে প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে এবং ২০১৮ সালে দ্বিতীয় পর্বে সাকিবের অধ্যায় শুরু হয়। আবারও টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের যাত্রা। স্বাভাবিকভাবেই ধারণা ছিল সাকিব মিডিয়ার সামনে নিজের ও দলের লক্ষ্য ও পরিকল্পনার কথা সবাইকে জানাবেন।
তবে অবাক করা তথ্য হলো, অধিনায়ক হিসেবে তৃতীয়বারের মতো দেশে কোনো সংবাদ সম্মেলন করেননি সাকিব। এখন আর করার সুযোগ নেই। কারণ কাউকে কিছু না বলে নীরবে দেশ ছেড়েছেন টিম বাংলাদেশের নতুন টেস্ট অধিনায়ক।
সবচেয়ে বড় খবর হলো, সাকিবের দেশ ছাড়ার খবরও জানেন না বিসিবির অধিকাংশ কর্মকর্তা। মাত্র কয়েকজন জানে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বিসিবির পক্ষ থেকে সাকিবকে সংবাদ সম্মেলন করতে বলা হলেও তিনি রাজি হননি। সাকিবের আচরণে স্পষ্ট, দেশ ছাড়ার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে চাননি তিনি।
সাকিবের ঘনিষ্ঠজন ও বিসিবির বিমানবন্দরের সমন্বয়ক ওয়াসিম খান এক সংবাদ মাধ্যমকে জানান, রোববার রাতে গোপনে দেশ ছেড়েছেন সাকিব। শাকিব দেশ ছাড়ার আগে তাকে বিদায় জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন ওয়াসিম খান।
বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বশীল সূত্রও এ খবর নিশ্চিত করেছে। রোববার রাত ১১টা ১০ মিনিটে একটি ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রাজধানী ঢাকা ছাড়েন সাকিব। এর প্রাথমিক গন্তব্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে পরিবারের সঙ্গে কয়েকদিন কাটানোর পর ১০ জুন অ্যান্টিগায় দলের সঙ্গে যোগ দেবেন সাকিব।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দলীয় ও ব্যক্তিগত ব্যর্থতার পর সাদা পোশাকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক হতে চান না মুমিনুল হক। ব্যাট হাতে বাজে পারফরম্যান্সের পর আজ টেস্ট অধিনায়কের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।
অধিনায়কত্ব ছাড়ার অন্যতম কারণ তিনি দলের জন্য ‘কন্ট্রিবিউট’ করতে পারেননি। অধিনায়ক হিসেবে দলে অবদান রাখতে পারছি না। দলকে অনুপ্রাণিত করতে পারছি না। ”
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুমিনুল হক।
বৈঠক থেকে বের হওয়ার পর গুলশানে বিসিবি সভাপতির বাসায় সাংবাদিকদের মুমিনুল হক বলেন, তিনি বোর্ডকে জানিয়েছেন, বিরতি দিলে ভালো হয়, বিরতিটা অধিনায়কত্ব থেকে। মুমিনুল হকের মতে, অধিনায়ক হিসেবে ভালো খেললে দল ফল না পেলেও অনুপ্রাণিত হতে পারেন।
আমিও ভালো খেলছি না। দলও ফল পাচ্ছে না। এই সময়ে অধিনায়ক করা কঠিন। শ্রীলঙ্কা সফরে বাংলাদেশের পরাজয় এই সিদ্ধান্ত ত্বরান্বিত করেছে। আমি মনে করি ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে পারলে ভালো হতো। তবে সিদ্ধান্তটা খুব একটা কঠিন মনে করেননি তিনি।
বোর্ডকে তিনি বলেন, নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া ভালো। কাউকে অধিনায়ক করার কোনো সুপারিশ আছে কি না তা নিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকরা প্রশ্ন তোলেন। জবাবে মুমিনুল বলেন, আমি কোনো পরামর্শ দেইনি। বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে। বোর্ড বিবেচনা করবে, দুই তারিখে (২ জুন) বোর্ড সভা হবে। গতকাল বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্রিকেট কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সঙ্গে বৈঠক করেন মুমিনুল হক।