শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর মুখ খুললেন সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সাইদুল হক সুমন। তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলন বা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে প্রথম থেকেই ছিলেন বলে দাবি করেন। একই সঙ্গে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থাকার বিষয়টি বোঝাতে পারেননি জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
সোমবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যার পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ তথ্য জানান। তবে ব্যারিস্টার সুমন ভিডিওতে তার অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য দেননি।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন,‘আমি শুরু থেকে ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলন বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কোটা সংস্কারের পক্ষে ছিলাম এবং এই আন্দোলনে যারা আহত-নিহত হয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পক্ষেও আমি ছিলাম। কিন্তু আমার ব্যর্থতা হলো, আমি আপনাদের বোঝাতে পারিনি। আমি এই ব্যর্থতার জন্য আমার যারা ফলোয়ার আছেন, আমার কাছে যারা প্রত্যাশা করেছেন সবার কাছে কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি।
তিনি বলেন, ‘আপনারা এখন যে কাঠামোগত সংস্কার চাচ্ছেন, অথচ এই সংস্কারের জন্য দীর্ঘ বছর আগে থেকে কাজ করে যাচ্ছি আমি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ, গত ১৫ বছরে যে দুই-তিনজন মানুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন, তাদের মধ্যে হয়তো আমাকে একজন পাবেন। আমি এস আলমের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে টাকা পাচারের জন্য মামলা করেছি।’
আবদুস সোবহান গোলাপ আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির প্রচার সম্পাদক, আমি নিজেই তার বিরুদ্ধে আমেরিকায় নয়টি বাড়ি থাকার মামলা করেছি। আমি নিজে বাদী হয়ে পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। জাতীয় সংসদে তার বিরুদ্ধে আমি বক্তব্য দিয়েছি। কর কমিশনার মতিউরের বিরুদ্ধে মামলা করেছি, সালাম মুর্শেদীর বাড়ি নিয়ে মামলা করেছি, ফুটবলের দুর্নীতি নিয়ে কাজী সালাউদ্দিন সম্পর্কে কথা বলেছি। অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে আমি নিজে মামলা করেছি, পরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার ৮ বছরের সাজা হয়েছে।’
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমার জীবনে কত ঝুঁকি ছিল। কোটা আন্দোলন শুরু হওয়ার দুই সপ্তাহ আগে সংবাদ সম্মেলন করে বলতে বাধ্য হয়েছি, জিডি করেছি যে আমার জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। সুতরাং এই যুদ্ধে সবসময় আমি চেষ্টা করেছি। এখন আপনারা যে যুদ্ধ শুরু করেছেন, ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে যে যুদ্ধ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ, এই যুদ্ধে সবসময় আমি দোয়া করি। এই যুদ্ধে সবসময় আমার জায়গা থেকে শরিক থাকার চেষ্টা করব।’
ব্যারিস্টার সুমনের চেম্বারে সহযোগী আইনজীবী হিসেবে কর্মরত মডেল ও অভিনেত্রী পিয়া জান্নাতুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় ব্যারিস্টার সুমনের অবস্থান সম্পর্কে জানতে। এ প্রসঙ্গে এ অভিনেত্রী বলেন, ব্যারিস্টার সুমন এখন কোথায় আছেন জানি না।
ব্যারিস্টার সুমন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে নির্বাচিত হন। এর আগে ফেসবুকে বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে আলোচনায় আসেন তিনি। এদিকে গত বছরের শুরু থেকে ব্যারিস্টার সুমনের চেম্বারে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন অভিনেত্রী পিয়া জান্নাতুল।