Sunday , December 15 2024
Breaking News
Home / Countrywide / সুযোগে সুর পাল্টাচ্ছে ইসলামী দলগুলো

সুযোগে সুর পাল্টাচ্ছে ইসলামী দলগুলো

বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) সম্প্রতি সরকারের আস্থাভাজন হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেয়েছে। তারা বিএনপির চলমান আন্দোলন কর্মসূচির সমালোচনা করে এ পর্যন্ত ভোটের পক্ষে কথা বলেছেন। ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতেও নানা তৎপরতা চালানো হয়েছে। কিন্তু এখন বিএসপি সংলাপের প্রয়োজনীয়তার কথা বলছে। নিজাম-ই-ইসলামী পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত আন্দোলন, খেলাফত মজলিস (ইসহাক), খেলাফত মজলিস (হাবিবুর রহমান), খেলাফত ইসলামী এবং ইসলামী ঐক্যজোটের দুই অংশ একই সুরে কথা বলছে। এ সংগঠনের নেতারাও হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে যুক্ত। ২০১৮ সালে, তারা এই সংগঠনগুলির ব্যানারে নির্বাচনেও অংশ নিয়েছিল। তবে অনুকূল পরিবেশ বুঝে সেসব সংগঠন এখন আলোচনায় সমাধান খুঁজছে। এর মধ্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত মজলিস, মুসলিম লীগ (বদরুদ্দোজা আহমেদ-কাজী আবুল খায়ের) এবং বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনও সংলাপ চায়। সরকারঘনিষ্ঠ ইসলামী দলগুলো সুযোগ বুঝে এমন সুরে কথা বলা রাজনৈতিক মহলে জন্ম দিয়েছে নতুন কৌতূহলের।

তিন কারণে ইসলামী দলগুলোর এমন অবস্থান হতে পারে বলে মনে করছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি ও ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মু. সিকান্দার খান। তিনি বলেন, রাজনীতি একটি জটিল খেলা। দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তারা হয়তো আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজছেন। পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন করে তারা কূটনৈতিক মহলে ভালো মনোযোগ আশা করতে পারেন। এটা সরকারকে চাপে ফেলা এবং নির্বাচনে বাড়তি কিছু সুবিধা পাওয়ার কৌশলও হতে পারে।

গত সপ্তাহে এক যৌথ বিবৃতি দিয়ে পাঁচদলীয় রাজনৈতিক মোর্চা ‘সমমনা ইসলামী দলগুলো’ নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) তপশিল ঘোষণা না করার আহ্বান জানায়। তারা বলেছে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি উপেক্ষা ও অবজ্ঞা করে নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করা হলে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হতে পারে। এই জোটের শরিক হিসেবে আছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, মুসলিম লীগ (বদরুদ্দোজা আহমেদ-কাজী আবুল খায়ের) ও খেলাফত মজলিস। এর মধ্যে চারটি দল নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত। তপশিল ঘোষণা হওয়ার পরও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের দাবিতে অনড় এ দলগুলো।

নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে ১৪ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক গোলটেবিল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। শাহজাদা এতে সভাপতিত্ব করেন বিএসপি চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভাণ্ডারী। বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও লিবারেল ইসলামিক জোটের নির্বাহী চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ আশিকীন আউলিয়া ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান আলম নূরী আল সুরেশ্বরী, বাংলাদেশ জান্দালের (বিজেডি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক পার্টির চেয়ারম্যান ফারহানা হোসেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন প্রমুখ। সভায় আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ ভাসানী) চেয়ারম্যান হাসরত খান ভাসানী প্রমুখ বক্তারা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

শাহজাদা বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি ও লিবারেল ইসলামিক অ্যালায়েন্সের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ সমকালকে বলেন, গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নির্বাচনের বিকল্প নেই। নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিস্তারিত ঘোষণা করলেও রাজনৈতিক দলগুলো বিভক্তি ও সহিংসতার পথ বেছে নেওয়ায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থার সংকটও পরিলক্ষিত হয়েছে। দেশ ও জনগণের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করি।

৩০০ প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত উল্লেখ করে লিবারেল ইসলামিক অ্যালায়েন্সের নির্বাহী চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগ ১৫ বছরেও ভোটের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে পারেনি। ২০১৪ও ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এবার যেন না হয়।

এটি লিবারেল ইসলামিক কোয়ালিশন সরকারের ঘনিষ্ঠ বলে জানা গেছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এই জোট গঠন করা হয়েছে। অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজত ইসলামের মধ্যেও জোট রয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও হেফাজতের অনেকেই এমন পরিস্থিতি তৈরি করে বিভিন্ন দলের হয়ে নির্বাচন করেছেন। সরাসরি হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে নির্বাচন করবেন না কেউ। হেফাজতের সঙ্গে সম্পৃক্ত ইসলামী দলের হয়েই মনোনয়ন চাইবে একটি অংশ। গতবারে হেফাজত নেতারা নিজাম-ই-ইসলামী পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত আন্দোলন, খেলাফত মজলিস (ইসহাক), খেলাফত মজলিস (হাবিবুর রহমান), খেলাফত ইসলামী এবং ইসলামী ঐক্যজোটের দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হন।

About Nasimul Islam

Check Also

হাসিনাকে গার্ড করতে গিয়ে আমরা অশান্তি চাই না, ও দেশে ফেরত যাক

বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনার পতন ঘটে। এর পর থেকে তিনি পার্শ্ববর্তী দেশ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *