Wednesday , October 30 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ভিসা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আমেরিকা কী চায়, এবার স্পষ্ট করলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র

ভিসা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আমেরিকা কী চায়, এবার স্পষ্ট করলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনভাবে তাদের নেতা নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এমনটাই জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শুধু নিশ্চিত করতে চায় যে, বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের নেতা নির্বাচন করুক।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোনো বিশেষ দলকে সমর্থন করে না। মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করতে চায় না।

স্থানীয় সময় সোমবার (২ অক্টোবর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন ছাড়াও গণমাধ্যমকর্মীদের ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা নিয়ে আলোচনা হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটে ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে একজন প্রতিবেদক ম্যাথিউ মিলারকে বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মী বা সাংবাদিকদের ওপর ভিসা নীতি প্রয়োগের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বিবৃতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি দাবি করেন যে, বিরোধী নেতাদের পাশাপাশি বাংলাদেশের জন্য তালেবান-স্টাইলের ভূমিকার পক্ষে কট্টরপন্থী গোষ্ঠী ইতিমধ্যেই মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের হুমকি দিচ্ছে, এমনকি চরমপন্থী মতাদর্শের সমালোচনাকারী সাংবাদিকদের তালিকাও প্রচার করছে। অন্যদিকে, নাগরিক ও মানবাধিকার কর্মী, যুদ্ধাপরাধ বিরোধী কর্মী, সম্পাদক, সাংবাদিক, লেখক, সংখ্যালঘু নেতারা গণমাধ্যমে সম্ভাব্য ভিসা বিধিনিষেধের বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার অবমাননা বলে দাবি করেছেন। আপনি কি রাষ্ট্রদূতের বিবৃতিকে সমর্থন করেন এবং ধর্মনিরপেক্ষ জাতিকে সমর্থনকারী এত বড় উদারপন্থি গোষ্ঠীর উদ্বেগকে সরাসরি অস্বীকার করেন?

জবাবে, ম্যাথিউ মিলার বলেন, “আমি গত সপ্তাহে যা বলেছিলাম তা কিছুটা ভিন্ন ভাষায় পুনরাবৃত্তি করব। বাংলাদেশিরা নিজেরাই যা চায় যুক্তরাষ্ট্রও সেটিই চায়: আর তা হচ্ছে- অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের সরকার, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং মিডিয়া সকলেই তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে যে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হোক – ঠিক যেমনটা আমরাও চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করেছি তা এই উদ্দেশ্য এবং বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনভাবে তাদের নেতা নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে। এবং আমি শুধু বলতে চাই – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনো বিশেষ দলকে সমর্থন করে না এবং নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে চায় না। যুক্তরাষ্ট্র শুধু নিশ্চিত করতে চায় যে বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের নেতা নির্বাচন করুক।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে গত মে মাসে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন সে সময় টুইটারে এ ঘোষণা দেন। এই নীতির অধীনে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে কোন বাংলাদেশীর উপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে যারা দেশটির গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত করার জন্য দায়ী বা চেষ্টা করেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, সরকার সমর্থক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যরাও এর আওতায় পড়বেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করার জন্য যে কাজগুলো করা হবে সেগুলোও উল্লেখ করা হয়েছে। এই কার্যকলাপগুলির মধ্যে রয়েছে -ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভীতি প্রদর্শন, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করার অধিকার প্রয়োগ করা থেকে মানুষকে বঞ্চিত করার জন্য সহিংসতাকে কাজে লাগানো, এবং এমন কোন পদক্ষেপ – যার উদ্দেশ্য রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা সংবাদমাধ্যমকে তাদের মত প্রচার থেকে বিরত রাখা।

২২শে সেপ্টেম্বর, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছিল যে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্তকারী ব্যক্তিদের উপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সে সময় এক বিবৃতিতে বলেন, “গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের জন্য স্টেট ডিপার্টমেন্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে। এদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দলের সদস্য ও রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্য রয়েছেন।”

বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে নতুন ভিসা বিধিনিষেধে সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দেন। অনেকেই এই সমস্যা নিয়ে চিন্তিত।

এমতাবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে ঘোষণা করেছে যে কোনো বাংলাদেশি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।

About bisso Jit

Check Also

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল রাষ্ট্রদূত হওয়ায় যা বললেন মিলার

বাংলাদেশের আলোচিত সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *