Wednesday , October 30 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বাপের বেটি শেখ হাসিনা কইছে আমেরিকা স্যাংশন দিলে আমিও স্যাংশন দেব: মোজাম্মেল হক

বাপের বেটি শেখ হাসিনা কইছে আমেরিকা স্যাংশন দিলে আমিও স্যাংশন দেব: মোজাম্মেল হক

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘বাপের বেটি’ বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারী এবং আদর্শের উত্তরাধিকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাপের বেটি! যোগ্য বাবার যোগ্য মেয়ে কইছে? আপনি (আমেরিকা) স্যাংশন দিলে আমিও স্যাংশন দেব, আমার জনগণ দেবে।

তার পর আর কোন কথা থাকে?

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম খান হলে শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিনের ৩৯তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে গণতন্ত্র গঠনে শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় জননেতাদের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।  সভার আয়োজন করে শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন মেমোরিয়াল সোসাইটি।

বাংলাদেশের জনগণের আমেরিকায় যাওয়ার দরকার নেই এবং দেশি বিদেশি প্রভুর কথায় চলবে না জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী বলেন, আমেরিকায় যাওয়ার দরকার কি? আমাদের কোনো দরকার নেই। আমাদের সাবেক প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন—আমার কখনো আমেরিকান ভিসা ছিল না, আমার কখনো দরকার ও হয়নি। আর আমি বলব- দেশ কি আমেরিকার কথায় চলবে নাকি আমাদের জনগণের কথায় চলবে। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান রচনা করেছিলেন, তাতে বলা হয়েছে এই রাষ্ট্রের মালিক বাংলার মানুষ। বিদেশীরা আমাদের প্রভু নয়। তাই এটা বিবেচনার বিষয় নয়। শহীদের রক্তে লেখা যে সংবিধান, সেটাকে সমুন্নত রেখে রাষ্ট্র চলবে।

মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধী ছিল, তারা আমাদের চারপাশেই আছে। তারা আজ আবার আমাদের স্বাধীনতার পতাকা কেড়ে নিতে চায়। তাই আজ আমরা শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিনের মতো আত্মত্যাগী শহীদ নেতার অভাব অনুভব করছি। আর যারা আমাদের স্বাধীনতার পতাকা কেড়ে নিয়ে দেশকে অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায় তাদের মোকাবেলায় আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হব। ‘

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ঠেকাতে ডিসেম্বরে আমেরিকা সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল। আর মনে আছে ১৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে আমেরিকার প্রতিনিধি বলেছিলেন ‘সিফায়ার’। তার মানে যুদ্ধ থামিয়ে যে যার অবস্থানে থাকা। আর আমরা যদি তা মেনে নিতাম বা জাতিসংঘে পাশ হয়ে যেত তাহলে ১৬ ডিসেম্বর আমরা স্বাধীনতা পেতাম না, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করত না। আমাদের যুদ্ধ আরও প্রসারিত হত।সে সময় আমেরিকার প্রস্তাবে রাশিয়া ভেটো দিয়েছিল, সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন জাতিসংঘের সদস্যপদ পাওয়ার জন্য আবেদন করেন, তখন আমেরিকান প্রতিনিধি দল বলেছিল, বাংলাদেশকে সদস্যপদ দেওয়া হলে তা সারা বিশ্বের জন্য স্থায়ী বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। এর আগে হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে ‘বটমলেস বাস্কেট’ বলেছিলেন। ‘

১৯৭৪ সালে আমেরিকার জন্য বাংলাদেশে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষের কথা উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু নগদ অর্থ দিয়ে আমেরিকা থেকে চাল-গম কিনেছিলেন। সেই চাল-গম চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে পৌঁছায়নি, মাঝপথে উধাও হয়ে যায়। এর ফলে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। এই দুর্ভিক্ষের অন্যতম কারণ এটি। ‘

সভাপতির বক্তব্যে শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন স্মৃতি সংসদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, আমাদের গাজীপুরের মাটি বীরের মাটি। এখানে অনেক বীরের জন্ম হয়েছে। গাজীপুরে তোলপাড় শুরু হয় স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক আগে থেকেই। সেখানে অনেক বীরকে শহীদ হতে হয়েছে। আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। আমি মনে করি, একজন মানুষ যদি ভালো কাজ করে, মানুষের সেবা করে, তাহলে সমাজের সবাই তাকে পছন্দ করে, ভালোবাসে। বাবা ময়েজউদ্দিন মারা যাওয়ার ২৪ বছর পর তার প্রমাণ পেলাম। আমার বাবার ভালো কাজ মানুষ মনে রেখেছে। এজন্য তারা আমাকে বেছে নিয়েছে। ‘

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন স্মৃতি সংসদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন। শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন স্মৃতি সংসদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকির সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান।

আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অবজারভারের সম্পাদক ও সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্মৃতি পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল বাতেন, বাংলাদেশ সাংবাদিক অধিকার ফোরামের সভাপতি আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।

About Nasimul Islam

Check Also

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল রাষ্ট্রদূত হওয়ায় যা বললেন মিলার

বাংলাদেশের আলোচিত সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *