Friday , December 13 2024
Breaking News
Home / International / বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দূতাবাসগুলো বিভক্ত: কে কোন পক্ষে

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দূতাবাসগুলো বিভক্ত: কে কোন পক্ষে

খুব শিগগিরই বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন নির্বাচনের পথে হাঁটতে শুরু করেছে। চলতি সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এখন পর্যন্ত নির্বাচন কীভাবে হবে, কোনো দল নির্বাচনে অংশ নেবে বা কোনো দল নির্বাচনে অংশ নেবে না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। বিএনপি এখন পর্যন্ত বলে আসছে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার না করলে নির্বাচন হবে না। আর শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে না এলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কী করবে? তারা কি নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে? বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করবেন কি না, এমন নানা ইস্যুতে কূটনৈতিক মহল এখন ব্যস্ত।

বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে বিদেশি দূতাবাসগুলোর যেন ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তারা বাংলাদেশের নির্বাচনের জন্য অভিন্ন কৌশল প্রণয়নের চেষ্টা করছে। কিন্তু অনেক প্রভাবশালী দেশ সেই কৌশলে একমত নয়। ২০০৬ সালের রাজনৈতিক সংকটে যুক্তরাষ্ট্র, ভারতের মতো সবাই অভিন্ন অবস্থানে এসে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছিল এবার সেরকমটি নেই। বরং এখন দূতাবাস পাড়া বাংলাদেশের নির্বাচন প্রশ্নে সম্পূর্ণ বিভক্ত হয়ে পড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশ মনে করে বাংলাদেশের নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া উচিত। সেজন্য বিএনপিকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা করা উচিত এবং সরকারের সঙ্গে অবিলম্বে সংলাপের পথ উন্মুক্ত করা উচিত এবং এ অভিমত নিয়েই তারা বিভিন্ন মহলের সঙ্গে কথা বলছেন। তবে এই পরামর্শ সরকার গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে না। কিন্তু অন্যদিকে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ কয়েকটি দেশ মনে করে যে দুই পক্ষকে সমঝোতায় আসতে ছাড় দিতে হবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে কথা বলেছেন। তিনি বিএনপিকে ধ্বংসাত্মক রাজনীতি থেকে সরে আসার, আপাতত আন্দোলন কর্মসূচি বন্ধ করে সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসার পরামর্শ দেন। বিএনপি এখন পর্যন্ত সেই প্রস্তাবে রাজি নয়।

অন্যদিকে বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে এখন শক্তিশালী তৃতীয় পক্ষের আবির্ভাব ঘটেছে। এই তৃতীয় পক্ষ ভারত, চীন ও রাশিয়া নিয়ে গঠিত, তিনটি দেশই মনে করে বাংলাদেশের নির্বাচন একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই অভ্যস্তরীর ব্যাপার নিয়ে কারো নাক গলানো উচিত নয়। বাংলাদেশের নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হওয়া উচিত এবং এই নির্বাচন কীভাবে হবে তা বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন দেখবে। এ বিষয়ে বাইরের কোনো দেশের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, তিনটি দেশ অভিন্ন অবস্থানে থাকলেও এই তিনটি দেশ আবার একসঙ্গে মিলে এ নিয়ে আলোচনা করছেন না। তিন দেশই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এমন মতামত প্রকাশ করছে। তবে বাংলাদেশ নিয়ে ভারত ও চীনের পরস্পরবিরোধী স্বার্থ রয়েছে। তারপরও বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এ দুই দেশ অভিন্ন মত প্রকাশ করছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে অতীতে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে সরকারের ওপর বৈদেশিক চাপ প্রয়োগে সব দূতাবাস একই মঞ্চে দাঁড়িয়েছিল। ২০০৭ সালে সামরিক বাহিনী সমর্থিত একটি অনির্বাচিত সরকার সমস্ত দূতাবাসের একই উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছিল। এখন যখন ভারত, চীন, রাশিয়ার মতো প্রভাবশালী দেশগুলো বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে, অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের মতো প্রভাবশালী দেশগুলো বাংলাদেশে সহিংসতার রাজনীতি বন্ধের পক্ষে। যুক্তরাষ্ট্র কি এককভাবে বাংলাদেশের নির্বাচনে সরকারের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারবে? এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হিসেবে উঠে আসে।

About Nasimul Islam

Check Also

‘গণহারে’ বাতিল হচ্ছে ভারতীয়দের ভিসা, জানা গেল কারণ

উপসাগরীয় দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা আবেদন আশঙ্কাজনক হারে বাতিল করছে। দেশটির নতুন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *