মীরসরাইয়ে জামায়াতের কর্মী সমাবেশে স্থানীয় যুবদল কর্মীদের আপত্তি থেকে শুরু হওয়া বাকবিতণ্ডা এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন গণমাধ্যমকর্মীও রয়েছেন।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মীরসরাই পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের এস রহমান স্কুলে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় যুবদলের আহ্বায়ক কামরুল হাসান বলেন, “আমাদের এলাকায় জামায়াতের কর্মী সমাবেশে ছাত্রলীগের কিছু সক্রিয় কর্মী উপস্থিত ছিলেন। এ নিয়ে যুবদলের নেতাকর্মীরা আপত্তি জানালে হট্টগোল শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমি ঘটনাস্থলে গেলে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে রিয়াজ (২৬) এবং হাসান (৩০) গুরুতর আহত হন এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া আমিসহ শরীফ (২২) ও রিফাত (২৪) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।”
অন্যদিকে, জামায়াতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তাদের কর্মী সমাবেশে যুবদল কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। উপজেলা জামায়াতের অফিস সেক্রেটারি শফিকুল আলম শিকদার বলেন, “আমাদের সাংগঠনিক কর্মসূচি চলাকালে যুবদলের কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।”
আহতদের মধ্যে রয়েছেন জামায়াতের সেক্রেটারি আনোয়ারুল্লাহ আলম মামুন (৫৫), সাংবাদিক আশরাফ উদ্দিন (৩৯), এবং আরও বেশ কয়েকজন কর্মী। তাদের মধ্যে নুরুল আলমকে চমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
মীরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “জামায়াতের সমাবেশে হামলার ঘটনা দুঃখজনক। স্বাধীন দেশে যে কোনো দল বা গোষ্ঠী সভা-সমাবেশ করার অধিকার রাখে। আমরা এমন ফ্যাসিবাদী আচরণকে সমর্থন করি না।”
মীরসরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দীপ্তেশ রায় বলেন, “জামায়াতের সমাবেশে হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এখনো কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জোবায়ের হোসেন তারেক জানান, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সংঘর্ষের ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।