বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতার নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে জাতিসংঘে জানিয়েছে বাংলাদেশ।
গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের সংখ্যালঘু বিষয়ক ফোরামের ১৭তম অধিবেশনে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
অধিবেশনে কয়েকজন বক্তা দাবি করেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন চলছে এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার তার উদাহরণ। এর জবাবে তারেক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, চিন্ময় দাসের গ্রেফতারকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। তিনি জানান, চিন্ময় দাসকে নির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে, যা আদালতের মাধ্যমে সমাধান হবে।
আরিফুল ইসলাম আরও বলেন, “বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতির গৌরবময় দৃষ্টান্ত বিদ্যমান। তবে দুঃখজনকভাবে, কিছু মহল অতিরঞ্জিত ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এই ফোরামেও আমরা এমন প্রচেষ্টা দেখেছি।”
তিনি উল্লেখ করেন, “প্রত্যেক বাংলাদেশি তার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করতে এবং মতামত প্রকাশে সমান অধিকার ভোগ করে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম প্রধান অঙ্গীকার।”
বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি জানান, ৫ আগস্টের পর ঘটে যাওয়া সহিংসতার মূলে রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত কারণ ছিল, সাম্প্রদায়িক নয়। তিনি বলেন, সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের বেশিরভাগই মুসলিম এবং সাম্প্রদায়িক আক্রমণের কোনো সুপরিকল্পিত উদাহরণ নেই।
তিনি আরও বলেন, “সম্প্রতি একটি মুসলিম আইনজীবী হত্যার ঘটনায় সরকার তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে। ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার সবসময় প্রস্তুত।”
তারেক মো. আরিফুল ইসলাম উল্লেখ করেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির ঐতিহ্য ধরে রাখতে অভূতপূর্ব সমর্থন উপভোগ করছে। সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তিনি বলেন, “বিশ্ব দেখেছে, বাংলাদেশের সমাজ কীভাবে সংখ্যালঘুদের রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং ধর্মীয় সম্প্রীতির ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।”
জাতিসংঘে বাংলাদেশের এই অবস্থান দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং মানবাধিকার রক্ষায় সরকারের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে।