Monday , December 30 2024
Breaking News
Home / Countrywide / কোটি কোটি টাকার সেতুতে পাওয়া গেল অপ্রত্যাশিত জিনিস, উদ্ধোধনের আগেই বেহাল অবস্থা সেতুর

কোটি কোটি টাকার সেতুতে পাওয়া গেল অপ্রত্যাশিত জিনিস, উদ্ধোধনের আগেই বেহাল অবস্থা সেতুর

নির্মান কাজের অনিয়ম ফলে উদ্ধোনের আগেই একটি সেতুর মাঝের অংশ প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন ফুট দেবে গেছে। ফলে ব্রিজের সম্পুর্ন অবকাঠামো ভেঙ্গে গেছে। তাই এই ব্রিজকে এখন পুরোপুরি ভেঙ্গে আবার নতুন করে তৈরি করতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিদর্শনকারীরা। এই ব্রীজের জন্য বরাদ্দ ছিল প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা।

নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই সাড়ে তিন কোটি টাকার সেতু দেবে গেছে। ৩০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণে কোনো নিয়ম মানা হয়নি। সেতুর গার্ডার ও স্লাবের সেন্টারিং কাজে স্টিলের পাইপের পরিবর্তে বাঁশ ও কাঠের পাইল ব্যবহার, ঠিকাদারের দায়িত্বে অবহেলা ও সাইটে ঠিকাদারের প্রকৌশলী অনুপস্থিতিসহ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে সেতুটি ধসে পড়েছে। টাঙ্গাইলের লৌহজং নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২৪ জুলাই) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযানে গিয়ে দেখতে পায় সেতুর মাঝখানে দেবে গেছে। এ সময় টাঙ্গাইল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমি দুদককে জানায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার সতর্ক করা হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি তা অগ্রাহ্য করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে গেছে। আর স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী একটি মহল এই অনিয়মের সঙ্গে সরাসরি জড়িত।

দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শফিউল্লাহ অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগসাজশ করে ব্রিজ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয় সহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমানের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। টিমের অপর সদস্যরা হলেন- কোর্ট পরিদর্শক মো. জাহিদুল ইসলাম, উপ-সহকারী পরিচালক মো. মামুনুর রশিদ ও মো. জাহেদ আলম। একটি এনফোর্সমেন্ট টিম টাঙ্গাইল পৌর এলাকার বেড়াডোমা-ওমরপুর সড়কের বেড়াডোমা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন প্রতিবেদন দাখিল করবে। দুদক জানায়, অভিযান পরিচালনার সময় টিম দেখতে পায়, নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ব্রিজটি মাঝখান দিয়ে দেবে দেবে গেছে। স্পেসিফিকেশন বহির্ভূতভাবে সেতু নির্মাণ, গার্ডার ও স্লাবের সেন্টারিং কাজে স্টিলের পাইপের পরিবর্তে গজারি, ইউক্যালিপটাস ও বাঁশের পাইল ব্যবহার, ঠিকাদারের দায়িত্বে অবহেলা ও সাইটে ঠিকাদারের প্রকৌশলী অনুপস্থিতিসহ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।

জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় টাঙ্গাইল শহরের বেড়াডোমা এলাকায় সেতু নির্মাণ করছে। ৮ মিটার প্রস্থ ও ৩০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর থেকে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করে। গত ১১ মে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৫৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। জুনের মাঝামাঝি সময়ে সেতুটির ওপরের অংশে ঢালাই করা হয়। কিন্তু ১৬ জুন রাতে সেতুটির মাঝখানের সাটারিং সরে গিয়ে সাড়ে তিন ফুট দেবে যায়। ফলে নির্মাণাধীন সেতুটি ভেঙে নতুন করে আবার করতে হবে।

সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যায়ের বাজেট নিয়ে একটি ব্রীজের নির্মান কাজ শরু করা হলেও নিদ্রিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই ব্রীজের নির্মানকাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ব্রীজের নির্মান কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো। এদিকে ব্রীজের নির্মান কাজে চলছে ব্যাপক অনিয়ম। এই অনিয়মের ফলে ব্রীজটি নির্মান কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙ্গে পরেছে। এখন ব্রীজটি আবার ভেঙ্গে নতুন করে তৈরি করতে হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

About Syful Islam

Check Also

কোহিনূরের পর বিশ্বের সবচেয়ে দামি হীরা দরিয়া-ই-নূর বিদেশে পাচার করেছিল শেখ হাসিনা

ঢাকার নবাবি আমলের মহামূল্যবান হীরকখণ্ড ‘দরিয়া-ই-নূর’ নিয়ে রহস্য আজও অমীমাংসিত। ২০১৬ সালে সোনালী ব্যাংক সদরঘাট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *