জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, “খুনি হাসিনা ও তার দোসরেরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে যাতে আমরা সফল হতে না পারি। যদি আমরা ব্যর্থ হই, তাহলে এখানে যারা আছি, তাদের অস্তিত্ব খুনি হাসিনা নিশ্চিহ্ন করে দেবে।”
আজ শনিবার (৩০ নভেম্বর) ময়মনসিংহ নগরের টাউন হলের তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ৫৫ শহীদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা করে অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, “৫ আগস্টের আগে অনেক শহীদের পরিবার ঠিকমতো লাশ দাফন করতে পারেনি। তাদের বাড়িতে থাকতে দেওয়া হয়নি, বরং হয়রানি করা হয়েছে। যদি আবার খুনি হাসিনার দোসররা ফিরে আসে, তাহলে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।”
তিনি আরও বলেন, “কালো শকুনদের ষড়যন্ত্র এখনও থামেনি। আপনাদের দোয়ায় যদি বেঁচে থাকতে পারি, তবে শহীদ পরিবারের কাউকে দুর্দশাগ্রস্ত জীবন কাটাতে দেব না। এটি করতে হয়তো সময় লাগবে, তবে আমরা সব সময় শহীদ পরিবারগুলোর পাশে থাকব।”
অনুদান বিতরণ অনুষ্ঠানে সারজিস আলম প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার উদাহরণ টেনে বলেন, ‘দেশের অন্যতম সাবেক প্রধামন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নাকি এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছে। কত টাকা? দুই কোটি টাকা। তার জন্য জেলে যেতে হয়েছে। শেখ হাসিনার দোসররা যদি আজ থেকে বিশ বছর পর ফিরে আসে তখন এমন করবে যে আমরা ফাউন্ডেশনের ২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছি, এই বলে জেলে পাঠিয়ে দেবে। বিষয়টি আমাদের সবার আত্মসম্মানের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ জন্য আমাদের প্রপার ডকুমেন্ট লাগবে। সঠিক কাগজপত্র পৌঁছানো হলে এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের ফান্ড পৌঁছে দেওয়া হবে।’
আর্থিক অনুদানের বিতরণ অনুষ্ঠানে সারজিস আলম আরও বলেন, ‘আমাদের সকলের দায়িত্ব, যে স্বপ্ন নিয়ে, যে স্পিরিট নিয়ে এই অভ্যুত্থান হয়েছে, সেটিকে রক্ষা করা। আমরা একদিকে যেমন সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করব, অপরদিকে প্রশাসনসহ সকল স্তরে সার্বিক কাজে সহযোগিতাও করব। প্রশাসনের যারা হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত ছিল, ভিডিও ফুটেজ ও ছবি দেখে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’
অনুষ্ঠান শুরু করার আগে শহীদ পরিবারের সদস্যদের কাছে গিয়ে খোঁজ নেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো. ইউসুফ আলী, অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি (ক্রাইম) মোহাম্মদ শরিফুর রহমান, জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) শামীম হোসেন, সিভিল সার্জেন অফিসের প্রতিনিধি মেডিকেল অফিসার তুবাউল জান্নান লিমাত, শহীদ আহনাফের মা জারতাজ পারভীন প্রমুখ। সেখানে উপস্থিত হন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঢাকার কয়েকজন সমন্বয়ক ও সহ সমন্বয়ক।