ভারতের আবহাওয়া বিভাগের ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ‘অখণ্ড ভারত’ সেমিনারে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানসহ কয়েকটি দেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত। ঐক্যের বার্তা দিতে এবং উপমহাদেশের ইতিহাস উদযাপন করতে এ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এনডিটিভি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পাশাপাশি ভুটান, আফগানিস্তান, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা এবং নেপালসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশকে সেমিনারে আমন্ত্রণ জানিয়েছে নয়াদিল্লি। এমনকি মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য-দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদেরও অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান করা হয়েছে।
পাকিস্তান ইতোমধ্যেই সেমিনারে অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে বাংলাদেশ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মতি দেয়নি। ভারতীয় কর্মকর্তারা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জবাবের অপেক্ষায় রয়েছেন। ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ঢাকা যদি আমন্ত্রণ গ্রহণ করে, তবে এটি ঐতিহাসিক এক মুহূর্ত হয়ে উঠবে।
আবহাওয়া বিভাগের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, “আমরা চাই, আইএমডি প্রতিষ্ঠার সময় অবিভক্ত ভারতের অংশ থাকা সকল দেশের প্রতিনিধিরা এই উদযাপনে অংশ নিন। এটি কেবল একটি ঐতিহাসিক উদযাপন নয়, বরং উপমহাদেশের ঐক্যের প্রতীক।”
এ উপলক্ষে ভারতীয় অর্থ মন্ত্রণালয় একটি বিশেষ স্মারক মুদ্রা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার মূল্য হবে ১৫০ রুপি। পাশাপাশি, প্রজাতন্ত্র দিবসে একটি বিশেষ ট্যাবলো প্রকাশের অনুমোদন দিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তবে, ‘অখণ্ড ভারত’ ধারণাটি অত্যন্ত বিতর্কিত। এটি ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস)-এর অন্যতম মূল মতাদর্শ। এই ধারণা অনুযায়ী, প্রাচীন ভারতবর্ষের ভূখণ্ড পশ্চিমে আফগানিস্তান থেকে পূর্বে মিয়ানমার এবং উত্তরে তিব্বত থেকে দক্ষিণে শ্রীলঙ্কা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। ‘অখণ্ড ভারত’ ধারণার বাস্তবায়ন হলে বর্তমানের বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার এবং শ্রীলঙ্কার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হয়।
এমন বিতর্ক সত্ত্বেও ভারত সরকারের এই আমন্ত্রণ ঐতিহাসিক মুহূর্ত সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।